রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
আজ এসএমই দিবস

করোনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিপর্যয়

রুহুল আমিন রাসেল

মহামারী করোনাভাইরাসে বিপর্যয় নেমেছে ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়। এসএমই খাতের সংকট উত্তোরণে সরকার স্বল্পসুদের ঋণ প্রণোদনা দিলেও, তা পাননি সারা দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী। ফলে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আছেন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদের জন্য আরেকটি প্রণোদনা ও কর ছাড়ের দাবিও উঠেছে ব্যবসায়ী মহলে। এমন প্রেক্ষাপটে আজ দেশে পালিত হচ্ছে ৫ম আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস-২০২১।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিপর্যয় নেমেছে। ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যাতে ব্যাংকের কাছে ঋণ পান, সেজন্যে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার প্যাকেজ দিয়েছে। কিন্তু সারা দেশের অধিকাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঋণ পাননি। সরকার পাশে দাঁড়াতে চায়। এই লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ চাই। কারণ, অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা  খারাপ অবস্থায় আছে। শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতকে আরও এগিয়ে নিতে ২০১৭ সাল থেকে ২৭ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত এমএসএমই দিবস পালিত হয়। এবার নানা আয়োজনে এমএসএমই দিবস উদযাপন করতে যাচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি জানিয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার ২০০৭ সালে এসএমই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠানটি এসএমই খাতের সামগ্রিক উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নারী-উদ্যোক্তাদের নিয়ে আসা ও তাঁদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

এসএমই ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, সরকারের উন্নয়ন রূপকল্পসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০২৪ এর মধ্যে জাতীয় আয়ে (জিডিপি) এসএমই খাতের অবদান বিদ্যমান ২৫ শতাংশ থেকে ৩২ শতাংশে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে এসএমই নীতিমালা ২০১৯ বাস্তবায়নে কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রণোদনার আওতায় মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের মাঝে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা এবং আগামী অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা যে সব কারণে ব্যাংকের সহায়তা পাননি, উদ্যোক্তাদের সেই সমস্যা দূর করতেই কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। উদ্যোক্তাদের নিরলস সেবা দিতে আমরা এসএমই ফাউন্ডেশনকে শক্তিশালী করতে চাই।

তবে চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-সিডব্লিউসিসিআই’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, মহামারী করোনা সংকটে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। করোনা শুরু থেকে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। নারী উদ্যোক্তারা সহজে ঋণ পান না। অধিকাংশ মহিলা উদ্যোক্তা ঋণের আওতাভুক্ত নয়, তাই তারা প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, সারা দেশের ৫৩ লাখ ৭২ হাজার ৭১৬টি ক্ষুদ্র পাইকারি ও খুচরা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা ২ কোটি ১৪ লাখের বেশি। গত এক বছরে করোনার আঘাতে দোকান মালিকরা কর্মচারীদের বেতন প্রদানের ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন। গত বছর লকডাউনে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার পুঁজি বিনষ্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও ২০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ বিনষ্ট হয়েছে। লকডাউনে ক্ষুদ্র ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর