যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার দায়ে মিনিয়াপোলিস শহরের বরখাস্ত শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেনেক চৌভিনকে ২২ বছর ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। গত শুক্রবার মার্কিন আদালতের এই রায়কে ঐতিহাসিক বলছেন অনেকে। আদালতের ঘোষণায় স্বাগত জানিয়েছে ফ্লয়েডের পরিবার। রয়টার্স, বিবিসি।
৪৫ বছর বয়সী সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণ হয়। দন্ড ঘোষণা করে বিচারক বলেন, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অপব্যবহার এবং বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে তাকে এই সাজা ভোগ করতে হবে। তবে শুনানির সময় সাজার বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে একে সরল বিশ্বাসের ভুল বলেছেন চৌভিনের আইনজীবী। এদিকে কৌঁসুলি চৌভিনের ৩০ বছর কারাদন্ড চেয়েছিলেন। কিন্তু আদালত ২২ বছর ৬ মাসের দন্ড ঘোষণা করেছে। জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যায় গত এপ্রিলেই দোষী সাব্যস্ত হন অভিযুক্ত ডেনেক চৌভিন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শুক্রবার সাজা ঘোষণা করে। এক টুইটবার্তায় ফ্লয়েডের আইনজীবী বেন ক্রাম্প উল্লেখ করেন, ‘ঐতিহাসিক রায় অপরাধীকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করেছে। পাশাপাশি সমাজের ক্ষত সারিয়ে তুলতে ফ্লয়েডের পরিবার এবং আমাদের জাতিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে।’ ফ্লয়েডের বোন ব্রিজিত ফ্লয়েড বলেন, ‘পুলিশের এই জঘন্য ঘটনাটিকে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্র গুরুত্ব দিতে বাধ্য হয়েছে। যদিও আমাদের আরও সামনে যেতে হবে।’ শুনানির সময় তার ভাই টেরেন্স ফ্লয়েড আসামির সর্বোচ্চ ৪০ বছরের সাজার দাবি জানান।
এ দিন আদালত আরও বলে, ‘ফ্লয়েডের পরিবার যে যন্ত্রণা সহ্য করছে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে’। বিচারকের এমন ঘোষণায় চরম হতাশা প্রকাশ করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কেইথ এলিসন বলেন, আসামিকে যে সাজা দেওয়া হয়েছে তা একেবারেই যথেষ্ট নয়। উল্লেখ্য, জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগে গত বছরের ২৫ মে পুলিশ কর্মকর্তা ডেনেক চৌভিন ফ্লয়েডকে ৯ মিনিট ঘাড়ে হাঁটু চেপে বসে থাকেন। সে সময় ফ্লয়েড বলেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’ এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান তিনি। এ ঘটনার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের ঝড় বয়ে যায়।
