শিরোনাম
সোমবার, ২৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

নতুন ভয়ংকর মাদক ডিএমটির সন্ধান গ্রেফতার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

এলএসডির (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড) পর এবার নুতন ভয়ংকর মাদক ডায়েমেথিল ট্রাইপ্টেমিন বা ডিএমটি’র সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। এই ডিএমটির সঙ্গে ‘এলএসডি’ এবং ‘আমেরিকান ক্যানাবিস’সহ (গাঁজা) চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের লাভ রোড এলাকা থেকে র‌্যাব সদর দফতর এবং র‌্যাব-২ এর যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম। তারা হলেন- সৈয়দ মঈন উদ্দিন আহমেদ ওরফে শাদাব, আব্রাহাম জোনায়েদ তাহের, স্বপ্নীল হোসেন ও সিমিয়ন খন্দকার।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, বিদেশে পড়ালেখা করার জন্য অবস্থানকালেই সম্ভ্রান্ত পরিবারের উচ্চশিক্ষিত সন্তানরা জড়িয়ে        পড়ছে ভয়ঙ্কর সব নতুন মাদকে। কেউ থাইল্যান্ডে গিয়ে নতুন মাদক ডিএমটিতে আসক্ত হচ্ছে, কেউ আবার লন্ডনে গিয়ে এলএসডি সেবন করছে। পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরলেও আসক্তি থেকে পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে দেশে আমদানি করছে এলএসডি ও ডিএমটি নামের নতুন এসব ভয়ঙ্কর মাদক। গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৪০ ব্লট আলোচিত মাদক এলএসডি, নতুন মাদক ডিএমটি ৬০০ মিলিগ্রাম, আমেরিকান ক্যানাবিজ ৬২ গ্রাম এবং মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এলএসডি সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি। এটি মূলত বিদেশ থেকে পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনা হয় এবং উচ্চমূল্য হওয়ায় মূলত এর ব্যবহারকারী উচ্চবিত্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অপর দিকে উদ্ধার করা নতুন মাদক ডিএমটি, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম Dimethyl Tryptamine। এটি একটি হ্যালুসিনোজেনিক ট্রিপটামাইন ড্রাগ। প্রকৌশল বা রাসায়নিক গবেষণাগারেও এই মাদক তৈরি করা সম্ভব। মূলত এটি মুখ দিয়ে এলএসডি সেবনের মতো, যা ধোঁয়ার মাধ্যমে শ্বাস নিয়ে বা ইনজেকশনের সঙ্গে নেওয়া যায়। এটি সেবনের পর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট গভীর হ্যালুসিনেশন তৈরি করে। এটি সেবনের পর দ্রুত হ্যালুসিনেশন হয় এবং তারা কল্পনার জগতে প্রবেশ করে। মূলত এ থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা হতে পারে, এমনকি জীবননাশও হতে পারে।’ র‌্যাব সূত্র বলছে, গ্রেফতার শাদাব রাজধানীর উত্তরায় স্থানীয় এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ‘এ’ লেভেল শেষ করার পর ভারতের দার্জিলিংয়ে ২০১৩ সালে ‘ও’ লেভেলে পড়াশোনা করে। এরপর সে ২০১৫ সালে বিবিএ পড়ার জন্য থাইল্যান্ডে যায়। পরে এক বছর সে থাইল্যান্ডে বিবিএ পড়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সঙ্গে এলএসডি ও ডিএমটি মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশে এসেও ওই মাদক গ্রহণ ও সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। শাদাব মূলত এই ড্রাগ বিদেশ থেকে বিভিন্ন পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশে নিজে গ্রহণ ও বিক্রি করে। অপর দিকে গ্রেফতার তাহের রাজধানীর এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ‘এ’ লেভেল শেষ করে মালেয়েশিয়া গমন করে। ২০১৫-১৬ সাল পর্যন্ত পড়ালেখার জন্য সেখানে অবস্থান করে। পরবর্তীতে সে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে গমন করে। সেখানে সে নিয়মিত এলএসডি ও ডিএমটি গ্রহণ করত। সেখান থেকে এমবিএ শেষ করে ২০২০ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসে। বাংলাদেশে নিয়মিত এলএসডি ও ডিএমটি সে গ্রহণ ও বিক্রি করে। এ ছাড়া গ্রেফতার স্বপ্নীল এবং সিমিয়ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত। ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কিশোর শীল জানান, এলএসডি ও ডিএমটিসহ গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা করেছে র‌্যাব।

সর্বশেষ খবর