কক্সবাজারের সামুদ্রিক জলসীমা থেকে বিশ্বে এই প্রথম সামুদ্রিক মাছের প্রজাতি উদ্ভাবন করছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অ্যাকোয়াটিক বায়োরিসোর্স রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষক দল এ গবেষণাকর্মে সম্পৃক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের জলসীমায় পাওয়া যায় বলে এর ইংরেজি নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশি গিটারফিশ’। শেকৃবি ফিশারিজ, অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড মেরিনসায়েন্স অনুষদের ডিন ও গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব জানান, দেহের গঠন, বাহ্যিক আকৃতি ও ডিএনএ বারকোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রজাতিটি শনাক্ত হয়েছে। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং এদের ডিএনএ বারকোডিং গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য ড. হাবীব তাঁর পিএইচডি সুপারভাইজার কোরিয়ার সমুদ্রবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. ইওনহোলির নামে মাছটির বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন গ্লুকোসটেগাস ইওনহোলি। মাছটি রাইনোপরিসটিফরমিস বর্গ, গ্লুকোসটেগিডি পরিবার এবং গ্লুকোসটেগাস গণের একটি প্রজাতি। গবেষক দল জানান, গ্লুকোসটেগিডি পরিবারের প্রজাতিগুলোকে জায়ান্ট গিটারফিশ বলা হয়। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত জায়ান্ট গিটারফিশের আটটি প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে। দুটি প্রজাতি ছাড়া বাকি সব গিটারফিশ সামুদ্রিক লোনা পানিতে বাস করে। এর মধ্যে দুটি প্রজাতি মাঝেমধ্যে ঈষৎ লোনা পানিতে আসে। দেখতে গিটার আকৃতির হওয়ায় এদের গিটারফিশ বলা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের তথ্যানুযায়ী পৃথিবীতে প্রাপ্ত গিটারফিশ মহাবিপন্ন।
বাংলাদেশি গিটারফিশ প্রজাতিটি বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় ডিএনএ বারকোডিংয়ের মাধ্যমে হাঙর ও শাপলাপাতা জাতীয় মাছের প্রজাতি শনাক্তরণ ও সংরক্ষণ পরিস্থিতি নিয়ে করা গবেষণার সময় পাওয়া যায়। যাতে অর্থায়ন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। গবেষণা প্রবন্ধটি ২৯ জুন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী জ্যুট্যাক্সা জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। শেকৃবি উন্নততর গবেষণার মাধ্যমে আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করে গবেষক দলকে অভিনন্দন জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া।
