শিরোনাম
শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় দাবদাহে ৬ শতাধিক মানুষের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিম ও কানাডার পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে বয়ে যাওয়া ভয়াবহ তাপপ্রবাহ এরই মধ্যে ৬ শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আক্রান্ত এলাকার গভর্নরদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সংলাপে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বুধবার উল্লেখ করেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ঢেউ অব্যাহত থাকায় এ পরিস্থিতির ভিকটিম হচ্ছি আমরা।’

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বহমান এ বিপর্যয়কর পরিস্থিতির ভিকটিম হয়েছে ৩ কোটির অধিক মানুষ। এর মধ্যে ১০ লাখের মতো প্রবাসীও আছে। কমিউনিটির নেতারা সবাইকে স্বাস্থ্যসচেতনতা অব্যাহত রেখে চলাফেরার পরামর্শ দিয়েছেন। বাসার এয়ারকন্ডিশন হিসাব করে চালাতে বলেছেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন থেকে। নজিরবিহীন এ দাবদাহে চলতি সপ্তাহেই কানাডার শীতপ্রধান ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার একটি শহরের তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল বলে সেখানকার আবহাওয়াবিদরা উল্লেখ করেন। এর আগে কানাডার তাপমাত্রা কখনই ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠেনি। দাবদাহ অব্যাহত থাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এখন সামনের কয়েক দিনের তীব্র গরম ও দাবানলের ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ করোনা মহামারী থেকে জেগে ওঠার সময়ে প্রকৃতির বৈরী এ আচরণে নতুন এক ভীতির মধ্যে নিপতিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিরাট একটি জনপদের মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনে গরমের তীব্রতা বুধবার থেকে কমে এলেও এরই মধ্যে এ স্টেটে তাপপ্রবাহের কারণে ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান। পোর্টল্যান্ড যে কাউন্টির অন্তর্ভুক্ত সেই মাল্টনোমায় শুক্রবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যাদের মৃত্যুর জন্য প্রাথমিকভাবে হাইপারথারমিয়াকে (হাইপোথারমিয়ার বিপরীত দশা) দায়ী করেছেন কাউন্টিটির ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। তাকে উদ্ধৃত করে দেওয়া সরকারি এক বিবৃতিতে পরিস্থিতির তুলনা করতে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ওরেগনে হাইপারথারমিয়ায় মাত্র ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলেও জানানো হয়।

ছয় দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এ স্টেটের হাসপাতালগুলোয় গরমজনিত অসুস্থতা নিয়ে আসা রোগীর চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ওরেগনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ছয় দিনে ৪৮৬টি হঠাৎ মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এ সংখ্যা প্রদেশটিতে সাধারণত এই সময়ে স্বাভাবিক মোট মৃত্যুর প্রায় তিন গুণ বলে বুধবার জানিয়েছে সেখানকার ময়নাতদন্তকারী বিভাগ। কয়েক দিনের মধ্যে এ তাপপ্রবাহ পুব দিকে সরে যেতে পারে ধারণা করা হলেও আবহাওয়ার যে পরিস্থিতি তাতে অ্যালবার্টা থেকে ম্যানিটোবার বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কানাডার সরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জের জ্যেষ্ঠ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ডেভিড ফিলিপস। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় স্টেটগুলোর গভর্নরদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনই ‘তীব্র তাপ ও দীর্ঘস্থায়ী খরার এমন বিপজ্জনক সংমিশ্রণের’ দিকে ধাবিত করছে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র রেকর্ডসংখ্যক দাবানল দেখতে পারে জানিয়ে তা মোকাবিলার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে আছে বলেও সতর্ক করেছেন জো বাইডেন।

সর্বশেষ খবর