মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
মগবাজার বিস্ফোরণ

উৎপত্তিস্থল এখনো অজানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনাটি গ্যাস জমে থাকার কারণেই হয়েছে বলে আগেই নিশ্চিত করেছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু ঘটনার ৯ দিন পেরিয়ে গেলেও এর উৎপত্তিস্থল নিশ্চিত করতে পারেনি কোনো তদন্ত কমিটি। ঘটনাস্থলে একটি গ্যাসের লাইনে লিকেজ পাওয়া গেলেও ওই জায়গা থেকেই যে ভবনটিতে গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল সে বিষয়েও নিশ্চিত নয় কেউ। এমনকি ভবনের ভিতরে তিতাসের গ্যাসের লাইন থাকলেও সেটি অনেক দিন ধরে পরিত্যক্ত বলে নিশ্চিত করেছে তিতাস। এমনকি বিস্ফোরণস্থলে সিলিন্ডার অক্ষত থাকায় বিষয়টি নিয়ে প্রথম থেকেই ধূম্রজাল দেখা যায়। তবে, তদন্ত শেষে সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেছে তদন্ত কমিটি গঠন করা সংশ্লিষ্ট সংস্থা। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি নির্মাণের নকশা থেকে ১৪ ফুট সামনে বাড়ানো হয়েছে। গ্যাসের পাইপলাইনের যে উৎস পাওয়া গেছে তা ওই ভবনের নিচে শনাক্ত হয়েছে। 

বিষয়টি মাথায় রেখে বিভিন্ন বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটিগুলো কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করেন পেট্রোবাংলা ও তিতাস গ্যাস কোম্পানি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি দল। ঘটনাস্থলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন তারা। পরিদর্শন শেষে পেট্রোবাংলার গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জি এম শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল, উৎস কোথায়, আশপাশের কোনো লাইন থেকে লিকেজ হলো কি না, রাস্তার পাশে সুয়ারেজের কাজ হয়েছে সেখান থেকে হয়েছে কি না। এ ছাড়া এসি বিস্ফোরণ হলো কি না। সব বিষয় একত্র করে পরবর্তী সময়ে একটি সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হবে। তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন লাইন থেকে আগুনের সূত্রপাত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি। গ্যাসলাইন থেকে লিকেজের ফলে এ ঘটনা ঘটেছে কি না। আবার গ্যাস সিলিন্ডার থেকে হয়েছে কি না- এসব বিষয় দেখা হচ্ছে। গ্যাসের সঞ্চালন লাইন বৈধ না অবৈধ ছিল সে বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি। এই লাইনটি, ভবনের নিচে কীভাবে গেল সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। ভবনের নকশার সঙ্গে মিলিয়ে পরবর্তী সময় এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে। তিতাস গ্যাস কোম্পানির তদন্ত কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ঘটনাস্থলে যা দেখলাম আমরা অবজারভেশনে রেখেছি। যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছি। এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনায় রমনা মডেল থানায় দায়ের করা মামলার বর্তমান তদন্তকারী সংস্থা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিস্ফোরণের উৎপত্তিস্থলের উৎস সম্পর্কে এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। আমরা এ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছি এবং সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে আকস্মিক বিস্ফোরণে ৭৯ রাখি নীড় ধসে পড়ে। আশপাশে কম্পন তৈরি হয়ে ১৮টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই বিস্ফোরণে ১১ জন নিহতসহ দুই শতাধিক লোক আহত হন। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদফতর পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর