সোমবার, ১২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

বিলের পানিতে ডুবিয়ে জোড়া খুন গ্রেফতার ২

গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরের কোনাবাড়ী বাঘিয়া এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনার সাত দিন পর নিহতদের পরিচয় শনাক্ত ও মূল আসামিসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাওনা টাকার বিরোধের জেরে এ দুজনকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রবিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) জাকির হাসান। এ সময় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ, সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোনাবাড়ী জোন) সুভাশীষ ধর, সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি, উত্তর) রিপন চন্দ্র সরকার, কোনাবাড়ী থানার ওসি আবু সিদ্দিকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। নিহতরা হলেন, রংপুরের মিঠাপুকুর থানার চাঁদপাড়া গ্রামের আলমগীর মিয়ার ছেলে মাহমুদুল হাসান (২০) ও নীলফামারী জেলার ডিমলা থানার সাতনাই কলোনির আলম মিয়ার ছেলে রাকিব হোসেন (১৮)। নিহত মাহমুদুল ও রাকিব  কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকায় একটি বেকারি কারখানায় কাজ করতেন। গ্রেফতাররা হলেন- গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার কিসমত দুর্গাপুর মধ্যপাড়া এলাকার রাসেল প্রধান (২৫) ও বগুড়া জেলার ধুনট থানার শৈলমারী গ্রামের শৈকত সরকার (২৪)। জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান জানান, গত বুধবার রাতে (৭ জুলাই) কোনাবাড়ী থানার বাঘিয়া এলাকার পরিত্যক্ত ইটভাটার পাশের বিল থেকে অজ্ঞাত দুজনের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে এস আই তাপস কুমার ওঝা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার (১০ জুলাই) কালিয়াকৈরের চন্দ্রা থেকে সৈকতকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূল আসামি রাসেল প্রধানকে নিজবাড়ী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জোড়া খুনের ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং তার শনাক্তমতে নিহতদের পরিচয় প্রকাশ পায়। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল পুলিশকে জানান, তিনি এবং নিহত দুজন কোনাবাড়ীর আমবাগ এলাকার একটি বেকারিতে কাজ করতেন। নিহত মাহমুদুলের কাছে আড়াই হাজার টাকা পাওনা ছিল তার। এর জেরে মাহমুদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রাসেল। গত ৩ জুলাই রাতে তারা তিনজন বাঘিয়া বিলের কাছে বেড়াতে যান। এরপর জাদু দেখানোর কথা বলে প্রথমে মাহমুদুলকে হাত-পা  বেঁধে বিলের পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন। পরে হত্যার বিষয়  জেনে যাওয়ায় সিমেন্টের পিলার দিয়ে মাথায়, বুকে ও পিঠে আঘাত করে রাকিবকে হত্যা করে পানিতে ডুবিয়ে দিয়ে মৃতদেহের ওপর ঘাস লতাপাতা দিয়ে ঢেকে দেয় এবং নিহতদের কাছে থাকা ২টি মোবাইল ফোন সেট ও নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়। পরদিন সকালে নিহত মাহমুদুলের মোবাইল সেটটি কালিয়াকৈরের চন্দ্রা মোড় এলাকায় গ্রেফতার  সৈকতের কাছে বিক্রি করে রাসেল প্রধান বাড়ি চলে যায়। পুলিশ বিলের পানি থেকে নিহত মাহমুদুলের জিন্সের প্যান্ট, বিলের পাড় থেকে হত্যায় ব্যবহৃত কংক্রিটের তৈরি সীমানা পিলারের ভাঙা অংশ, মাহমুদুলের মোবাইল ফোন সেটটি উদ্ধার করে।

সর্বশেষ খবর