সোমবার, ১২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

লাকসামে ড্রাগন চাষ

ফারুক আল শারাহ, লাকসাম

লাকসামে ড্রাগন চাষ

ইউটিউবে ড্রাগন চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হন কুমিল্লার লাকসামের আনিছুর রহমান দুলাল। গড়ে তুলেন ড্রাগন ফলের বাগান। দুলালের স্বপ্নের বাগান ভাগ্য বদলে তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

উপজেলার মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের পাশাপুরের সরকারি হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুর রহমানের ছেলে আনিছুর রহমান দুলাল এইচএসসি পাস করে নিজের মেধা, প্রজ্ঞায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। ২০১৩ সালে তিনি প্রবাসে পাড়ি জমান। ৫ বছর পর দেশে এসে মুদাফরগঞ্জ বাজারে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। এরই মধ্যে তিনি ইউটিউবে লাভজনক ড্রাগন ফলের চাষ দেখে নিজের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখেন। একের পর এক ভিডিও দেখে তিনি ড্রাগন চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এরই প্রেক্ষিতে নিজ বাড়ির পাশে ৬০ শতাংশ জায়গায় তিনি ড্রাগন বাগান গড়ে তুলেন। বাগানে তিনি ১ হাজার ৩০০ ড্রাগন গাছের চারা রোপণ করেন। ইতিমধ্যে চারাগুলো বেশ পরিপক্ব হয়ে ফল দেওয়া শুরু করেছে। বাগানে এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করেছেন। আনিছুর রহমান দুলাল জানান, ড্রাগন চারা রোপণের এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গাছে ফুল আসে। ফুল আসার পর ২০/২৫দিনের মধ্যে ফল ধরে। ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সী গাছ হতে ৫ থেকে ২০টি ফল পাওয়া যায়। তবে প্রাপ্তবয়স্ক একটি গাছ থেকে ১০০টি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে প্রতিটি ড্রাগন গাছ ২০ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০ গ্রাম থেকে শুরু করে এক কেজি পর্যন্ত। তিনি আরও জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। এ প্রেক্ষিতে নিজের বাগান থেকে তিনি প্রথম দফাতেই ১২/১৩ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ড্রাগন গাছে তেমন রোগবালাই না থাকার কারণে বাগানে তুলনামূলক খরচ কম। অল্প কিছুদিনের মধ্যে আরও জমি সংযুক্ত করে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করবেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ড্রাগন চাষে তার ভাগ্য বদলে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। লাকসাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, আনিছুর রহমান দুলালের বাগানটির মাটি ড্রাগন চাষের জন্য বেশ উপযোগী। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পক্ষ থেকে আমরা সর্বদা বাগানটি পরিদর্শন করে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তার মতো অন্যরাও বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় ড্রাগন চাষ করে নিজেরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারেন। এ জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিতে প্রস্তুত বলে তিনি জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর