বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

চুরিতে বাধা দেওয়ায় খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় কেয়ারটেকার সুবল হত্যায় জড়িত সন্দেহে মো. মাসুদ রানা ও মো. মিজানুর রহমান নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার সুবর্ণসাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যমতে নিহতের পরনে থাকা জামার পোড়া অংশবিশেষ, হত্যায় জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তির রক্তমাখা জামা, এক পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও হত্যায় ব্যবহৃত কাচি উদ্ধার করা হয়। এর আগে শনিবার রাতে উত্তরার সেক্টর-৩, রোড-১০ এর ১০ নম্বর বাড়ির কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল খুন হন। পুলিশ বলছে, চুরিতে ব্যর্থ হওয়ায় সুবলকে খুন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল গভীর রাতে কেয়ারটেকারকে হাত-পা বেঁধে রাখবে। বাড়ির মালিক ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় বাসায় ঢুকে বাড়ির অন্য সদস্যদের জিম্মি করে চুরি করবে। গতকাল ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, সুবল খুন হওয়ার পর থানায় মামলা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার দুই দিনের মধ্যে আমরা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যায় জড়িত মাসুদ ও মিজানকে গ্রেফতার করি। গ্রেফতার মাসুদ ওই বাসাতেই গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিল। দেড় মাস আগে সে চাকরি ছেড়ে গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ চলে যায়। সেখানে একটি লুঙ্গি কারখানায় মাইক্রোবাসের চালক হিসেবে কাজ নেয়। সে প্রায়ই নিহত সুবলের রুমে ইয়াবা সেবন করত ও নারী নিয়ে এসে সুবলের কক্ষে থাকত। মাসুদ উত্তরার ওই বাড়িতে চুরি করতে তার বন্ধু ও পেশাদার ডাকাত মিজানের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে। পুলিশ আরও জানায়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে মাসুদ কেয়ারটেকারকে জানায়, সে ও তার চাচাতো ভাই ঢাকায় এসে রাতে তার রুমে থাকবে। সে অনুযায়ী মাসুদ ও মিজান শনিবার সাড়ে ১২টায় সুবলের রুমে আসে এবং সেখানে ইয়াবা সেবন করে। পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল আরও বলেন, পরিকল্পনা মতো রাত প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে ঘুমিয়ে থাকা সুবলের হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে সে জেগে ওঠে। রুমে থাকা একটি ধারালো কাচি গলায় ধরে সুবলকে চুপ থাকতে বলে। এরপর গ্রেফতার মিজান কেয়ারটেকারের গলায় নাইলনের রশি পেঁচিয়ে ধরলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সুবলের গলায় ধারালো কাচিটি ঢুকিয়ে দেয় মাসুদ। রক্তক্ষরণ শুরু হলে মিজান ও মাসুদ কেয়ারটেকার সুবলের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এর আগে সুবল আসামিদের কামড় ও নখ দিয়ে আঁচড় দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর শক্ত করে সুবলের হাত-পা বাঁধে। এরপর রুমের বাইরে পানির ট্যাপে শরীরে লেগে থাকা রক্তের ছাপ ধুয়ে ফেলে এবং জামা-কাপড়ে রক্তের ছাপ মুছে ফেলার চেষ্টা করে। পরে আসামিরা ওই মালিকের বাসায় চুরির পরিকল্পনা বাদ দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর