বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকা-কুমিল্লা-সিলেট সড়কে যানজট, ফেরি ঘাটে উপচে পড়া ভিড়

প্রতিদিন ডেস্ক

লকডাউন শিথিল হওয়ার ঘোষণা ছিল গত মধ্যরাত থেকে। কিন্তু তার আগেই গতকাল প্রায় সবখানেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু হয়ে যায়। খোদ রাজধানীতে ছিল যানবাহনে ভিড়। হাইওয়ে সড়কগুলোতে ছিল যানজট। ফেরি ঘাটগুলোতে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- আজ থেকে চলমান লকডাউন শিথিলের ঘোষণা থাকলেও  গতকাল রাজধানী প্রায় আগের চিত্রে ফিরে আসে। প্রতিটি সড়কেই এদিন গণপরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে। খুলেছে অধিকাংশ দোকানপাট। বেড়ে যায় মানুষের চলাচল। ফলে লকডাউন শিথিলের আগেই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে রাজধানী। সকাল পৌনে ৯টার দিকেই রাজধানীর বিজয় সরণির উভয় সিগন্যাল, এলিফ্যান্ট রোড, শাহবাগ, বাংলামোটর, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কেও যানজটের সৃষ্টি হয়। বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের সব সিগন্যালে লোকজনকে অনেক সময় পর্যন্ত যানজটে অপেক্ষা করতে হয়।

মুন্সীগঞ্জ : টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনের শেষ দিনে গতকাল মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরি ঘাটে ঢল নামে মানুষের। ঘাটে ঢাকা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল উভয়মুখী যাত্রীর আসা-যাওয়ায় মুখর ছিল ঘাট এলাকা। শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে লকডাউন শিথিল হলেও আজ থেকেই ঘাটে চাপ দেখা যাচ্ছে।’ পার্কিং ইয়ার্ডে দুই শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় বলেও জানান তিনি। মাওয়া নৌ পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ সিরাজুল কবির জানান, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ভিড় ততই বাড়ছে শিমুলিয়া ঘাটে। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে চেকপোস্ট থাকার পরও কোনোভাবেই আটকে রাখা যাচ্ছে না জনস্রোত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ও মেঘনা সেতুর মাঝামাঝি অবস্থিত লাঙ্গলবন্ধ সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত ডেক-স্লাব মেরামত কাজ করার কারণে দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যানবাহনগুলো বিকল্প সড়ক হিসেবে কাঁচপুর-ভুলতা-নরসিংদী আশুগঞ্জ-ভৈরব ব্রিজ, সরাইল বিশ্বরোড হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এতে করে গতকাল সকালের পর থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে প্রায় ৩০ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে শত শত যানবাহনের চালকেরা পণ্য নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে ভোগান্তির শিকার হন। পণ্যবাহী ট্রাক চালক মাহাবুবুর রহমান জানান, সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোডে যানজটে পড়েছিলাম। দীর্ঘ ৮ ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিলোমিটার পথ পার হয়েছি। কখন চট্টগ্রামে পৌঁছাব তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। কার্গো ভ্যাসেলের (১২ চাকার ট্রাক) চালক রাজন হাসান বলেন, ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোডে পৌঁছি, বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর অতিক্রম করছি। প্রায় ৮ ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছি। সেতু মেরামতের কারণে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ভারী যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এর মধ্যে মালবাহী কনটেইনার, কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক ও পিকআপ রয়েছে। যানজট নিরসনে জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক দেবব্রত কর জানান, থেমে থেমে মহাসড়কে যান চলাচল করছে। তবে বুধবার দুপুর নাগাদ সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তা হয়ে গেলে কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর