ঈদসহ প্রায় ২০ দিনের ছুটিতে দেশের রপ্তানি খাত দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের পাঁচটি সংগঠন প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে বলেছে- কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশ হাতছাড়া হয়ে যাবে। কারণ এক মাসের রপ্তানি শিডিউল গড়বড় হলেই পরবর্তী ছয় মাসের রপ্তানি শিডিউলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর সুযোগ নেবে আমাদের প্রতিযোগী দেশসমূহ। এ অবস্থায় ছুটি সংক্ষিপ্ত করে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাগুলো যত দ্রুত সম্ভব ঈদের পর খুলে দিলে দেশের রপ্তানি খাত বহুমুখী বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে রক্ষা পাবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিটিটিএলএমইএ সভাপতি শাহাদাত হোসেন সোহেল এবং বিজিএপিএমইএ সভাপতি আবদুল কাদের খান। চিঠিতে আরও বলা হয়- গত রোজার ঈদে কাজের চাপ কম থাকায় ছুটিও কিছুটা শিথিল ছিল। এখন কাজের প্রচুর চাপ থাকায় ঈদে লম্বা ছুটির সুযোগ নেই। কিন্তু ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকার-ঘোষিত ১৪ দিন প্লাস ঈদের ছুটি তিন দিন প্লাস ফিরে আসতে দু-তিন দিন- মোট ১৯-২০ দিনের বন্ধ পেলে কোনো অবস্থাতেই শ্রমিকদের কর্মস্থলে ধরে রাখা সম্ভব হবে না। ছুটে যাবে উত্তরাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যা করোনার রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত। ফলে এ বিশালসংখ্যক শ্রমিক জনগোষ্ঠী ওইসব অঞ্চল থেকে কর্মস্থলে ফিরে এলে কভিড সংক্রমণের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ২০ দিন বন্ধের পর কারখানা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই জুলাইয়ের বেতন পরিশোধের বিষয়টিও সামনে চলে আসবে। তখন কঠিন হয়ে যাবে সেই বেতন পরিশোধের বিষয়টিও। চিঠিতে বলা হয়- ‘ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের সব বাজারই খুলতে শুরু করেছে। এখনই প্রত্যেকের হাতে রয়েছে পর্যাপ্ত কার্যাদেশ, রয়েছে জাহাজিকরণের প্রচ- চাপ, বিলম্ব হলেই এয়ার শিপমেন্ট ধরিয়ে দিতে কালবিলম্ব করছি না। করোনা মোকাবিলায় আপনার উদ্যোগ দেশ ও বিদেশে নিঃসন্দেহে প্রশংসিত। স্মরণকালের সর্বোচ্চ সংকটেও আপনার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহ এ দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সংকট মোকাবিলা করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সাহস জুগিয়েছে। শিল্পকারখানাসমূহ খুলে দেওয়ার আপনার সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি খাত ২০২০-২১ অর্থবছরে আবার কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেজন্য আমরা আপনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’