বুধবার, ২৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
অনেক দলের নেতা হিসাব দেওয়ার সময়সীমাও ভুলে গেছেন

হিসাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেই দলগুলোর

নতুন করে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে

গোলাম রাব্বানী

চলতি সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। নিবন্ধিত কোনো রাজনৈতিক দল এখনো হিসাব জমা দেয়নি। অনেক দলের নেতারা হিসাব দেওয়ার সময়সীমাও ভুলে গেছেন। এ ছাড়া দেশব্যাপী আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত লকডাউন চলতে থাকায় রাজনৈতিক কার্যক্রম নেই। দলগুলো তাদের হাইকমান্ডের মিটিং করতে পারছে না। তাই বার্ষিক হিসাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেই বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে অনেক দল। এ জন্য নির্বাচন কমিশন আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দলগুলোর হিসাব দেওয়ার সময় দিয়েছে। ঈদের পর দলগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত ৭ জুন হিসাব জমা দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত ৩৯ দলকে নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কোনো দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, করোনার কারণে দলগুলো ঠিকঠাক দলীয় অফিসের কার্যক্রম চালাতে পারেনি। এ ছাড়া ঈদের কারণে দলগুলো সময়মতো হিসাব দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে। যদিও করোনার কারণে গত বছর হিসাব দেওয়ার জন্য দলগুলোকে সময় দিয়েছিল ইসি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, বড় বড় দলগুলো হিসাব জমা দেয়নি, হিসাব দেওয়ার জন্য অনেকের প্রস্তুতিও নেই। তারা বলছেন, ৩১ আগস্টের মধ্যে দলের হিসাব জমা দিতে সময় দরকার হবে। গতকাল ইসির একজন উপ-সচিব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনার কারণে অনেক দলের হিসাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেই। তাই ইসি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দলগুলোকে সময় দিয়েছে। ঈদের পরে তাদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। গত বছরেও করোনার কারণে ইসির দলগুলোকে সময় দিয়েছিল। ইসি সূত্র জানিয়েছে, ইসির নির্ধারিত ফরমের মাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে এ হিসাব জমা দিতে হবে। চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে দলের তহবিল সংগৃহীত হলে কার বা কাদের কাছ থেকে কী ধরনের চাঁদা আদায় করা হয়েছে, তাও নির্ধারিত ফরমের ছক অনুযায়ী জানাতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে, কোনো দলই এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়নি। এর মধ্যে অধিকাংশ দলের কর্তাব্যক্তিরা জানেনই না হিসাব জমা দেওয়ার সময় প্রায় শেষ হয়ে আসছে। নির্বাচন কমিশন বলছে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ২০০৮-এর ধারা ৯ (খ)তে বলা হয়েছে, প্রতি বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অব্যবহিত পূর্বের বছরের সংশ্লিষ্ট দলের আর্থিক লেনদেন একটি রেজিস্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি ফার্ম দিয়ে অডিট করিয়ে সেই রিপোর্টের একটি কপি নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধিত কোনো দল পরপর তিন বছর কমিশনে তথ্য প্রদান করতে ব্যর্থ হয় তবে সেই দলের নিবন্ধন বাতিল করার বিধান রয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, করোনার কারণে ইসি এবারে আগেই সময় বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপির একজন নেতা জানিয়েছেন, হিসাব জমার বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে। আর ইসি যেহেতু সময় দিয়েছে। তাই আমরা সময়মতো হিসাব দেব।

তবে ছোট ছোট অনেক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নেতারা বলেন, করোনার কারণে আমাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নেই। তাই হিসাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেই। অনেক দলের নেতাদের কাছে হিসাব জমা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলেও প্রথমেই কিসের হিসাব, কোন হিসাব এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এরপর তাদের মাথায় হিসাব জমা দেওয়া বিষয়ে চিন্তা এসেছে। জানতে চাইলে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, নিবন্ধিত দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে সুনির্দিষ্ট ফরম পাঠানো হয়েছে দলগুলোর কাছে। করোনার কারণে এবারে দলগুলোকে আরও এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর