শিরোনাম
শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
জীবন সংগ্রাম

খেলনার বেহালায় জীবন নির্বাহ

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

খেলনার বেহালায় জীবন নির্বাহ

উশকোখুশকো চুল। মাথায় টুপি। মুখভর্তি সফেদ দাড়ি। মলিন পোশাক। ফুটপাথে বসে সুর তোলেন খেলনার বেহালায়।

হরেক রকম গানের। পাশেই বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা শ’খানেক ছোট-বড় বেহালার সারি। গানের ফাঁকে একটি-দুটি করে বিক্রিও হয়। এভাবেই দীর্ঘ ১০ বছর জীবিকা নির্বাহ করছেন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ হাছু মিয়া। তিনি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর থানার চলিতাডোবা গ্রামের বাসিন্দা।

গেল কয়েক বছর ধরে বসবাস করছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার। ভাড়া বাসায় রাতভর তৈরি করেন খেলনার বেহালা। দইয়ের পরিত্যক্ত ঘটি ও নারকেলের টালির সঙ্গে বাঁশের কঞ্চি, তার, সুতা, মলাটের কাগজ, পশুর চামড়া জুড়ে দিয়ে প্রস্তুত করেন এগুলো। রঙ দেওয়ার পর ঠিক করে রাখেন সুর ও তাল। পরে বিক্রির জন্যে ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি ছুটেন হাটে-হাটে।

তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এক সময় কৃষি কাজেই জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। নিজের জমি-জিরাত না থাকায় করতে হতো বর্গা চাষ। এতে তেমন একটা সুবিধা করতে না পেরে, প্রায় ১০ বছর আগে বেহালার কায়দায় নিজে নিজেই বিশেষ ধরনের খেলনার বাধ্যযন্ত্র তৈরি শুরু করেন। একে একে তৈরি করেন পাঁচ রকমের বেহালা। ওরস-উৎসব ও বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করতেন সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে করোনার কারণে এসব বন্ধ থাকায় বেচা-বিকিও নেই তেমন। তবুও কোনোমতে চলছে তাঁর জীবন-জীবিকা।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি ছোট-বড় খেলনার বেহালায় খরচ হয় ২০-৫০ টাকা। রাতভর কঠোর পরিশ্রমে সর্বোচ্চ ১০-১৫ টা তৈরি করা যায়। এরপর একে একে সুরের উপযোগী করে তুলতে হয়। প্রতিটা বিক্রি করা যায় ৫০-১০০ টাকায়। দৈনিক ৫০০-১০০০ টাকার বিক্রি হয়। তিনি বলেন, এখন বয়স হয়েছে। এখন বেশি  পরিশ্রম করতে পারি না। তবুও এটাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছি।

সর্বশেষ খবর