বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

হাসপাতালে উপচে পড়ছে রোগী

১৯ হাসপাতালে অতিরিক্ত ভর্তি ৪৫৩ জন, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ২৩৫, শনাক্ত ১৫ হাজার ৭৭৬

শামীম আহমেদ

হাসপাতালে উপচে পড়ছে রোগী

করোনার উপসর্গ নিয়ে গতকাল নরসিংদী থেকে আরিফা সরকার চিকিৎসার জন্য স্বামীর সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলে এসেছেন -জয়ীতা রায়

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় করোনা হাসপাতালে উপচে পড়ছে রোগী। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়েও হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে মিলছে না ভর্তির সুযোগ। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। গতকাল দেশের ১৯টি করোনা হাসপাতালে ৪৫৩ জন অতিরিক্ত রোগী ভর্তি ছিল। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতেই ছয়টি হাসপাতালে শয্যার চেয়ে বেশি ভর্তি ছিল ২১৯ জন। এমনকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০টি আইসিইউ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি ছিল ২১ জন।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ হাজার ২৮৪টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৭৭৬ জনের দেহে। শনাক্তের হার ২৮.৫৪ শতাংশ। এতে মোট শনাক্ত রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩ জনে। গত এক দিনে করোনা সংক্রমণে প্রাণ গেছে ২৩৫ জনের। এর মধ্যে হাসপাতালে ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাড়িতে মারা গেছেন ১৫ জন। একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সরকারের হিসাবে গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৭ জনের। সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল ঢাকা মহানগরীর ১৭টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে পাঁচটিতে ২১৫ জন অতিরিক্ত করোনা রোগী ভর্তি ছিল। এর মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেই শয্যার চেয়ে ৮২ জন অতিরিক্ত রোগী ভর্তি ছিল। এ ছাড়া বেসরকারি একটি হাসপাতালে ৭২ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি ছিল ৭৬ জন। চট্টগ্রাম মহানগরীতে চট্টগ্রাম  মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাতজন ও আল মানাহিল নার্চার হাসপাতালে পাঁচজন অতিরিক্ত রোগী ভর্তি ছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে ঢাকা বিভাগের তিনটি হাসপাতালে ৬৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের একটি হাসপাতালে ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের তিনটি হাসপাতালে ৩৪ জন, বরিশাল বিভাগের তিনটি হাসপাতালে ৯১ জন ও সিলেট বিভাগের একটি হাসপাতালে ছয়জন অতিরিক্ত রোগী ভর্তি ছিল গতকাল। তবে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের কোনো হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি ছিল না। মহানগরীর বাইরে সর্বাধিক অতিরিক্ত রোগী ভর্তি ছিল গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬২ জন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২২ জন, বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৭ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৮ জন, বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালে ৩৬ জন ও চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ১৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৩৫ জনের মধ্যে ১৪০ জন ছিলেন পুরুষ ও ৯৫ জন নারী। সর্বোচ্চ ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া ৬৫ জন চট্টগ্রাম, ৩২ জন খুলনা, ২১ জন রাজশাহী, ১২ জন করে সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ এবং আটজন বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ১৩৬ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, ৫৪ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ২৫ জন চল্লিশোর্ধ্ব, ১৫ জন ত্রিশোর্ধ্ব, চারজন বিশোর্ধ্ব ও একজনের বয়স ছিল ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।  গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় সবচেয়ে কম শনাক্তের হার ছিল রাজশাহী বিভাগে ১৮.৬১ শতাংশ ও সর্বোচ্চ শনাক্তের হার ছিল বরিশাল বিভাগে ৩৫.৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া সিলেট বিভাগে ৩৪.৭৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৩.৯৮ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ২৮.৯৫ শতাংশ, ঢাকা বিভাগে ২৭.৬০ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৭ শতাংশ ও খুলনা বিভাগে ২৪.১৮ শতাংশ ছিল শনাক্তের হার।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর