শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

পাখির মেলা বলিহরপুর গ্রাম

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

পাখির মেলা বলিহরপুর গ্রাম

পানকৌড়ি আর বক পাখির নিরাপদ আস্তানা ফুলবাড়ীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম বলিহরপুর। ভোর হওয়ার সঙ্গে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে ওই গ্রামের মানুষের। বাঁশঝাড় কিংবা উঁচু গাছের দিকে তাকালে দেখা যাবে শত শত পানকৌড়ি আর বকের নিরাপদ প্রজনন আবাসস্থল। এখানেই জন্ম নিচ্ছে পাখির বাচ্চা। প্রজননের জন্য আসা এসব পাখিকে ভালোবাসে গ্রামবাসীও। তাই কেউ চুপিসারে পাখি শিকারে এলে বাধা দেয় ওই গ্রামের মানুষ। মহাসড়কের পাশে হওয়ায় প্রতিদিনই পাখি দেখার জন্য ছুটে আসে মানুষ। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, ওই গ্রামের গাছে গাছে যেন পাখির সাদা-কালো ফুল ফুটে আছে। এ পাখিদের মিলনমেলা বলিহরপুর গ্রাম। পানকৌড়ি ও বক দেখতে হলে দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কের ঘেঁষা ফুলবাড়ী থেকে ৭-৮ কিলোমিটার পশ্চিমে বলিহরপুর গ্রামে যেতে হবে সকালে অথবা সন্ধ্যায়। বলিহরপুর গ্রামের মানুষ প্রকৃতিপ্রেমি, পাখিপ্রেমী। এ কারণে পাখীর অভয়ারণ্য বলিহরপুর গ্রাম। গ্রামের গাছে গাছে দেখা যায় পাখি কোনোটি উড়ছে, কোনোটি ডাকছে এবং পুকুরগুলোতে দেখা যায় কোনো পাখি মাছ শিকারে ব্যস্ত। এ গ্রামের প্রবেশ পথের পাশে পুকুরপাড়ের বাঁশঝাড়ের মাথায় বক, পানকৌড়ির কলকাকলীসহ এসব দৃশ্য দেখা যায়। সকালে আর বিকালে পাখিদের আনাগোনায় মন জুড়িয়ে যাবে সবার। এখানে কেউ পাখি শিকার করে না এবং কাউকে করতেও দেয় না। কেউ কোনো বক বা পানকৌড়িকে ধাওয়া করে না বা করতে দেয় না স্থানীয় মানুষ। স্থানীয়রা বলেন, ইতিমধ্যে ওইসব পাখি শিকারিরা যাতে না মারে এবং বিরক্ত না করতে পারে সে জন্য জনসচেতনতামূলক আলোচনাও হয়েছে। তবে গ্রামটিকে ‘পাখি প্রজনন কেন্দ্র’ ঘোষণা করা হলে আরও পাখির প্রতি মমতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে মানুষের। বলিহরপুর গ্রামে মহাসড়কের পাশে বাঁশঝাড় ও বিভিন্ন গাছের ডালে শত শত পানকৌড়ি আর বক আবাস গড়েছে। এরা বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আসতে শুরু করে এবং প্রজনন শেষে তাদের বাচ্চাগুলো বড় করে ভাদ্র মাসে চলে যায়। এখানে পাঁচ মাস তারা অবস্থান করে। গ্রামের পাশের নদী-নালা, খাল-বিল আর ফসলের মাঠে নানা জাতের মাছ, পোকামাকর, শামুক-ঝিনুক খেয়ে জীবন ধারণ করে। এখানেই নিরাপদ আশ্রয়ে বাসা বেঁধে ডিম দেয় এবং তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায় তারা। প্রায় সাত বছর এসব পাখি আসা-যাওয়া করে।

সর্বশেষ খবর