সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

রাজশাহীতেই তৈরি হচ্ছে গলদা চিংড়ির লার্ভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতেই তৈরি হচ্ছে গলদা চিংড়ির লার্ভা

রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের মিঠাপানিতে গলদা চিংড়ি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মৎস্য অফিসের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হচ্ছে গলদা চিংড়ির লার্ভা। এই লার্ভা রাজশাহী অঞ্চলের মাছচাষিদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে গলদা চিংড়ির প্রদর্শনীসহ মৎস্য অফিস নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারিভাবে গলদা চিংড়ির লার্ভা উৎপাদনের পাশাপাশি মিশ্র পদ্ধতিতে গলদার চাষ করতে জেলা মৎস্য কার্যালয় চাষিদের উৎসাহ দিচ্ছে। ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের মিঠাপানিতে গলদা চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে গলদা চিংড়ি উৎপাদনে রাজশাহীতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে মিঠাপানিতে গলদা চিংড়ি চাষ বেশ লাভজনক করে তুলতে চিংড়ি উৎপাদনের জন্য মাছচাষিদের নানাভাবে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। চলতি বছর জেলার সবগুলো উপজেলায় ৩৫-৪০ জন মাছচাষির মাধ্যমে গলদা চিংড়ি চাষের প্রদর্শনী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জেলায় কার্প জাতীয় মাছের সঙ্গে ৩.০৯২ হেক্টর জমিতে এই গলদা চিংড়ির চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১.২৪৭ মেট্রিক টন। মৎস্য অফিসের ফিস সিড ম্যাল্টিপুলেশন ফার্ম ব্যবস্থাপক ড. জিন্নাত আরা রোকেয়া চৌধুরী জানান, গলদা চিংড়ির ডিম সংগ্রহ থেকে শুরু করে পুরো নার্সিং প্রক্রিয়ায় বায়ো-সুরক্ষা বজায় রাখতে হয়। রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ডিম থেকে লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভা থেকে পোস্ট লার্ভা পর্যায়ে আসতে ১১টি ধাপ পার করতে হয়। জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, তারা দেড় বিঘার মতো জমিতে এই গলদা হ্যাচারিতে লার্ভা উৎপাদন করছেন। সেখানে প্রায় ১ লাখ লার্ভা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। লার্ভা পোস্ট লার্ভায় রূপান্তরিত হলে এটা চাষিদের কাছে সরবরাহ করা হয়। এই লার্ভা তারা মে-জুন মাসের দিকে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করেছেন। ইতিমধ্যেই অনেক চাষি কার্পজাতীয় মাছের চেয়ে গলদা চিংড়ি চাষে অধিক লাভবান হয়েছেন। পবা উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের আবদুস সোবাহান জানান, তিনি গলদা চিংড়ির চাষ করছেন। অনেক কৃষক তার থেকে চিংড়ি সংগ্রহ করেছেন।

 মৎস্য অফিসের ফিস সিড ম্যাল্টিপুলেশন ফার্ম ম্যানেজার ড. জিন্নাত আরা রোকেয়া চৌধুরী বলেন, ‘ব্যক্তি উদ্যোগে গলদার লার্ভা উৎপাদন বড় চ্যালেঞ্জ হওয়ায় আমরা সরকারিভাবে লার্ভা উৎপাদন শুরু করেছি। তবে গলদার পিএল প্রস্তুতের ক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি থাকে। পিএল প্রস্তুত করতে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে লবণাক্ত পানি নিয়ে আসতে হয়। আর মাদার চিংড়ি নিয়ে আসা হয় পিরোজপুর থেকে। তবে মিঠা পানিতে গলদার চাষ বৃদ্ধিতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা বলেন, ‘রাজশাহীর মিঠাপানিতে মিশ্রণ পদ্ধতিতে (কার্পজাতীয় মাছের সঙ্গে) গলদার চাষ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, রাজশাহীতে কার্পজাতীয় মাছের উৎপাদন একর প্রতি গড়ে ৫৪-৭২ মণ হয়; যার আনুমানিক মূল্য সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আর এই এক জমিতে যথাযথ মিশ্রণ প্রক্রিয়ায় গলদার চাষ করে সাড়ে ৪ লাখ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর