বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

টিকা মজুদ শেষ শুনেই স্টোর কিপারকে ঘুষি

বাসায় গিয়ে টিকা স্বাস্থ্যকর্মী বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নেত্রকোনার আটপাড়ায় টিকার মজুদ শেষ শুনেই টিকা নিতে আসা একজনের ঘুষিতে আহত হয়েছেন স্টোর কিপার আতাউর রহমান। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ঘুষিদাতা নুরুল আমিন (৩২) নামের এক যুবককে আটক করেছে। এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে থানায় মামলা দায়ের করেছেন স্টোর কিপার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আটপাড়া থানার ওসি জাফর ইকবাল। স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার মহামারী থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে সরকার টিকার আওতায় নিচ্ছে সবাইকে। গণটিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে দেশব্যাপী। এরই অংশ হিসেবে জেলার ১০ উপজেলায় একযোগে চলছে টিকা প্রদান। সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে টিকাদান কার্যক্রম  চলমান রয়েছে। তবে সঠিক সময় নিয়ে বিড়ম্বনায় সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন তথ্য পান না বলে অনেকের অভিযোগ। স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন সবাই। ফলে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে গতকাল দুপুরে আটপাড়ায় টিকাদান কেন্দ্রে। পুলিশের উপস্থিতিতেই টিকা প্রদানের সময় স্টোর কিপার বলে ওঠেন টিকার মজুদ শেষ হয়ে গেছে। এ কথা শুনে এক যুবক ক্ষুব্ধ হয়ে জানতে চান টিকাগুলো কোথায় বিক্রি করা হয়েছে। এক দুই কথায় দুজনের উত্তেজনা মুহূর্তেই স্টোর কিপার গালিগালাজ করেন। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবক স্টোর কিপারকে ঘুষি মারেন। এ ঘটনায় পুলিশ যুবককে আটক করে টিকা নিতে আসা অন্যরা যাতে বিব্রত না হন সেজন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। স্টোর কিপারকেই দোষারোপ করছেন তারা। তিনি অতিউৎসাহী হয়ে মানুষকে ক্ষিপ্ত করতে পারেন না বলে টিকা নিতে আসা রফিকুলসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেন। তারা বলেন এরা টিকা হয়তো বিক্রিই করে। তা না হলে সরকার ফ্রি দিচ্ছে সেখানে নাই বলবে কেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা।

বাসায় গিয়ে টিকা, স্বাস্থ্যকর্মী বরখাস্ত : চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানা এলাকার একটি বাসায় গিয়ে টিকা দেওয়ার ঘটনায় জড়িত স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) গতকাল তাকে বরখাস্ত করে। তা ছাড়া ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। চসিকের গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার, চসিকের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী বিষু দে এখনো পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী চুক্তিভিত্তিতে চসিকের মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে টেকনিশিয়ানের কাজ করতেন।  চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি চসিকে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন। তা ছাড়া এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না কিংবা কীভাবে টিকা চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী তিন কার্যদিবসে প্রতিবেদন জমা দেবে।  প্রসঙ্গত, গত শনিবার এমডি হাসান নামে এক যুবক ফেসবুকে বাসায় টিকা নেওয়ার একটি ছবি পোস্ট করেন। পরে সেটি পুলিশের নজরে আসে। তাঁকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে বিষু দে নামে চসিকের এক স্বাস্থ্যকর্মী এই টিকাকান্ডে জড়িত। এ ঘটনায় গত সোমবার খুলশী থানায় একটি মামলা করেছে চসিক। পরে দুজনকে আটক করা হয়।

সর্বশেষ খবর