ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, করোনা সংক্রমণের হার যদি কমতে থাকে তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক। তবে খুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানতে হবে। সরকার ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাকে ভ্যাকসিন দিয়েছে, এটি ভালো খবর। কিন্তু সবার ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গত বছরের আগস্টে যখন করোনার সংক্রমণ হার কমতে শুরু করল শিক্ষাবিদরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন খোলা হয়নি। অথচ তখন পরবর্তী পাঁচ-ছয় মাস খুলে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোদমে চালানো যেত। ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ছাত্রছাত্রীদের শেখানোর ব্যবস্থা না করে শুধু পরীক্ষা নিয়েই আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। অথচ শেখানোটাই প্রথম। পরীক্ষা কীভাবে হবে এ নিয়ে সরকার চিন্তায় আছে। এটা দেখে অবাক হই। আগে শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে পরে মূল্যায়নের চিন্তা করতে হবে। বাড়িতেই যদি শিক্ষা দিতে হয় তবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের দরকার কী। করোনার জন্য আমরা পিছিয়ে যেতে পারি। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের শিখিয়ে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এই শিক্ষাবিদ বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট যেভাবে দেওয়া হচ্ছে এর ওপর মূল্যায়ন হলে তা হবে মারাত্মক ভুল। কারণ এ প্রক্রিয়ায় ভালো ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা লিখবে কিন্তু কম নম্বর পাবে। কিন্তু তুলনামূলক কম মেধাবীরা বাবা-মার কাছে বা টিউটরের কাছে লিখে আনবে, তারা বেশি নম্বর পাবে। তা ছাড়া অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান বাজারেও কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। অনেক অ্যাসাইনমেন্ট হুবহু বই থেকেও তুলে দেওয়া হচ্ছে। তাই এর ওপর মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। অবকাঠামোগত সমস্যা থাকলে শিক্ষার্থীদের দুই শিফট করে ক্লাসে আনতে হবে। সকালের শিফটে জোড় আর বিকালের শিফটে বিজোড় সংখ্যার শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আনা যেতে পারে।
তবে একটু সময় নিয়ে কারিকুলাম শেষ করতে চাইলে অর্ধেক শিক্ষার্থীকে সপ্তাহে তিন দিন, বাকি শিক্ষার্থীদের বাকি তিন দিন ক্লাস নেওয়া যেতে পারে।