রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ঘাটে অচলাবস্থা, শত শত গাড়ির জট

মাদারীপুর ও মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

ফেরি সংকটে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যানবাহন পারাপারে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ১৭টি ফেরি থাকলেও চলছে মাত্র চারটি। ফলে গতকাল ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য যানবাহনকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ অবস্থায় ঘাটের দুই পাড়ে শত শত যানবাহনের জট তৈরি হয়। বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন জানান, গেল কয়েকদিন থেকে পদ্মায় তীব্র স্রোত থাকায় ফেরি চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের গতিবেগও বেড়েছে। নৌ চ্যানেলের বেশ কয়েকটি স্থানে ঘূর্ণিস্রোত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ফেরি চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। তাই শুক্রবার রাত থেকে নদীতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকাল ৯টা থেকে স্রোত কমতে থাকায় ফেরি চলাচল শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে পদ্মায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বড় ফেরিগুলো চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু জরুরি প্রয়োজনে চারটি ফেরি বর্তমানে চলাচল করছে। বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের টিআই জামাল উদ্দিন জানান, ফেরি পদ্মা পাড়ি দিতে দীর্ঘ সময় লাগে। বড় ফেরিগুলো তীব্র স্রোতের কারণে চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই ঘাটে গাড়ি ও ট্রাকের জট তৈরি হয়েছে। তিনি এ রুট এড়িয়ে চলার অনুরোধ করেন ট্রাকচালকদের।

 

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে ৫ শতাধিক যানবাহন। নৌপথের জন্য ১৭টি ফেরি থাকলেও চলছে মাত্র চারটি। এ চারটির মধ্যেও দুটি এ রুটে নতুন আনা হয়েছে। এগুলি হলো ফেরি বেগম সুফিয়া কামাল ও ফেরি বেগম রোকেয়া। আগে যেসব ফেরি ছিল তার মধ্য থেকে ফেরি কুঞ্জলতা ও ফেরি কদমরসুলকে রাখা হয়েছে। এ চার ফেরি দিয়ে কোনোরকমে সচল রাখা হয়েছে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুট। বিআইডব্লিউটিসির মাওয়াস্থ শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মাহবুবুর রহমান জানান, শুক্রবার বিকাল থেকে এ রুটে নতুন দুটি কে-টাইপ ফেরি বেগম সুফিয়া কামাল ও ফেরি বেগম রোকেয়া আনা হয়েছে এবং আগেই থাকা কে-টাইপ ফেরি কুঞ্জলতা ও ফেরি কদমরসুল চালু রয়েছে। এ ফেরি চারটি দিয়ে জরুরি যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।

এদিকে ঘাটে আটকে থাকা যানবাহনের জট তৈরি হওয়ায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। আরও দেখা গেছে, এ নৌরুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে এবং এখানে ৮৭টি লঞ্চ চালু রয়েছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় গতকাল শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম ছিল।

দৌলতদিয়া প্রান্তে ভোগান্তি : রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, তীব্র স্রোতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে শিমুলয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটের ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ওই রুটের যানবাহনগুলো দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে পারাপার হওয়ায় চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী যানবাহন।

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি বাড়ানোয় ভোগান্তি কিছুটা কমেছে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস, ছোট গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাপ দেখা যায়। বিকালের পর যানবাহনের চাপ কমতে থাকে।

সর্বশেষ খবর