রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের রায় প্রকাশ

হোমিও ইউনানি ডাক্তার লিখতে পারবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রিধারীদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ শব্দ ব্যবহার বৈধ নয় বলে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। রায়ে এসব বিকল্প চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গত বছর ১৯ নভেম্বর বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ-সংক্রান্ত রায় দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। ৭১ পৃষ্ঠার লিখিত রায়ে এ-সংক্রান্ত জারি করা রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে চার দফা পরামর্শ দিয়েছে আদালত। রায়ে হাই কোর্ট বলেছে, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০-এর ২৯ ধারা অনুযায়ী বিএমডিসির নিবন্ধনভুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনস্টিটিউট থেকে এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে ‘অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার’ শীর্ষক অপারেশনাল প্ল্যানের বিভিন্ন পদে কর্মরত হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কর্মকর্তাদের স্ব-স্ব নামের আগে ডাক্তার পদবি সংযোজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা এক কথায় আইনের কর্তৃত্ববহির্ভূত তথা বেআইনি। এ ছাড়া বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন শাখায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের তাদের নামের আগে পদবি হিসেবে ডাক্তার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়াও বেআইনি। হাই কোর্টের চার পরামর্শ : উচ্চ আদালতের ভাষ্য, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চিকিৎসা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এ কারণে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো। এক. ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ‘কাজাখস্তান ঘোষণা’ থেকে ‘আলমাআতা ঘোষণা’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সার্বিক পরিকল্পনা, নীতিমালা এবং প্রয়োজনীয় আইন দ্রুত প্রণয়ন করতে হবে। দুই. সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় তথা প্রচলিত এবং বিকল্প ধারার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় ‘রোগীকেন্দ্রিক চিকিৎসাসেবা’ নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। তিন. প্রয়োজনে বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির আলাদা মন্ত্রণালয় তথা ‘মিনিস্ট্রি অব আয়ুশ’-এর আদলে বাংলাদেশে একটি আলাদা মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করার পরামর্শ দেওয়া হলো। চার. বিকল্প ধারার চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কিত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও সেবার মান নির্ধারণ ও উন্নয়ন এবং বিকল্প ধারার চিকিৎসাশাস্ত্র-সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং প্রদত্ত ডিগ্রিগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়ার পদ্ধতি নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হলো। বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য আলাদা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন ও এ পদ্ধতির চিকিৎসকরা যাতে নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে গত বছর বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির ৯৬ জন চিকিৎসক হাই কোর্টে এ রিট আবেদন করেন। গত বছর ১ জানুয়ারি এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিল হাই কোর্ট।

সর্বশেষ খবর