বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
সংকটকালে মানুষের পাশে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বসুন্ধরার খাদ্য সহায়তা ১৩৫০ পরিবারে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বসুন্ধরার খাদ্য সহায়তা ১৩৫০ পরিবারে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা পেল ১৩৫০ পরিবার। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশনায় সারা দেশে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল জেলার শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট উপজেলায় করোনায় কর্মহীন দুস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়। সকালে শিবগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ৬০০ পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেন স্থানীয় এমপি ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, পৌর মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম, ইউএনও সাকিব আল রাব্বি, কানসাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী প্রমুখ। এ সময় ১২ জন বীরাঙ্গনাকেও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। পরে কানসাট উচ্চবিদ্যালয় আম্রকাননে ৩৫০ পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। শেষে ভোলাহাট মোহবুল্লাহ কলেজ প্রাঙ্গণে ৪০০ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের ত্রাণ পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন দুস্থ ও অসহায় নারী-পুরুষ। কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সহায়তা কার্যক্রম চলবে ২০ আগস্ট পর্যন্ত। তিন দিনে ৩ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হবে। সহায়তা  হিসেবে ১০ কেজি চাল, ৩ কেজি ডাল ও ৩ কেজি আটা বিতরণ করা হচ্ছে।

খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের এমপি ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, শিবগঞ্জে করোনা চলাকালে বন্যা ও নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তা কার্যক্রমে এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন। এ জন্য তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, করোনায় সাধারণ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এই সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপ ও কালের কণ্ঠ শুভসংঘ এগিয়ে এসে অসহায় পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। আমি শিবগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা যারা আজ সহায়তা পেলেন তারা দুই হাত তুলে তাদের জন্য দোয়া করবেন। তারা যেন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এমন সেবামূলক কাজ করতে পারেন।

এদিকে শিবগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ে সহায়তা নিতে আসা গত ৪ আগস্ট চরাঞ্চল পাকায় বজ্রপাতে ১৭ জনের সঙ্গে প্রাণ হারানো রফিকুল ইসলামের ছেলে মিঠুন বলেন, সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার পিতা বজ্রপাতে মারা যাওয়ার পর তাদের পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। এমন মুহূর্তে বসুন্ধরা গ্রুপের পাওয়া খাবার দিয়ে তার পরিবার অন্তত ১০ দিন চলতে পারবে। এ জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সহায়তা নিতে আসা স্বামী পরিত্যক্তা বৃদ্ধা সাধনা বলেন, তিনি অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিন পার করছেন। বসুন্ধরা গ্রুপের ১০ কেজি চাল, ৩ কেজি ডাল ও ৩ কেজি আটা পেয়ে তিনি আনন্দে কেঁদে ফেলেন। দৌলতপুর কদমতলা থেকে খাবার নিতে আসা স্বামীহারা রহিমা জানালেন, কয়েকদিন ধরে তার ঘরে খাবার ছিল না। এই খাবার পেয়ে মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন তিনি। এ জন্য তিনি বসুন্ধরার জন্য হাত তুলে দোয়া করেন।

বীরাঙ্গনারাও পেলেন বসুন্ধরার সহায়তা : এ ছাড়াও ১২ জন বীরাঙ্গনা বসুন্ধরার খাদ্য সহায়তা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, আল্লাহ যেন বসুন্ধরার মালিককে বাঁচিয়ে রাখেন এবং তিনি যেন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে পারেন। তারা প্রতিষ্ঠানটির আরও উন্নয়ন কামনাসহ বসুন্ধরা চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের দীর্ঘায়ু কামনা করেন। এ সময় বীরাঙ্গনা সফেদা, রহিমা, রেণু, সালেকা বেগম, হাজেরা বেগম, রাবেয়া, চম্পা, আরবী ও আয়েশা বলেন, দেশ স্বাধীনের জন্য তাদের অবদান থাকলেও অনেকেই তাদের মূল্যায়ন করে না। কিন্তু বসুন্ধরা গ্রুপ যে তাদের মনে রেখেছে এবং মূল্যায়ন করে খাবার সহায়তা দিয়েছে এ জন্য নিজেদের ভাগ্যবতী মনে করছেন তারা। আজ ১৯ আগস্ট নাচোল ও ২০ আগস্ট সদরে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর