শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
গোলটেবিলে বক্তারা

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বাঙালি জাতি এগিয়ে যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বাঙালি জাতি এগিয়ে যাচ্ছে

বাঙালির পরিচয় অর্থই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর আদর্শ ও চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন রাজনীতিক, আইনতত্ত্ববিদ, কবি, দার্শনিক ও গবেষক। এমন কোনো গুণ নেই যা বঙ্গবন্ধুর মধ্যে ছিল না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গতকাল ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয় ‘বহুমাত্রিক বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক। কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান আয়োজিত এ বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন বিশিষ্টজনেরা। এতে আলোচনা করেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক আ ব ম ফারুক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও একুশে টেলিভিশনের সিইও পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতার হোসেন,

 জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এম শাহনাওয়াজ, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাছিম আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, কলামিস্ট ও বিশ্লেষক ইকরামউজ্জমান, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্যসচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল প্রমুখ। ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বহুমাত্রিক বঙ্গবন্ধু নিয়ে আলোচনার বিষয় সত্যি প্রশংসার। আমি বহুদিন ধরে একটা দাবি জানিয়ে আসছি- ষড়যন্ত্রকারীদের আড়ালে রেখে খুনিদের বিচারকাজ কখনই সম্পূর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি না। খুনিরা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছে কিন্তু পেছনে ছিল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র।’ বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেলের মতো একজন দার্শনিক, যিনি নির্যাতিত মানুষের কথা বলতেন।’ তিনি বলেন, ‘সংবিধানের বিষয়ে একটি সত্য না বললে নয়। সত্যটি হচ্ছে ড. কামাল হোসেনকে সংবিধানের রচয়িতা বলা হয়। এর চাইতে বড় মিথ্যাচার আর হতে পারে না। কামাল সাহেব ছিলেন ৩৪ জনের একজন।’ ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘আগস্ট আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় শোকের মাস। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট যে অন্ধকার সকালটি আমাদের জীবনে এসেছিল তেমন সকাল আর বাংলাদেশে আসেনি। যারা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করল তারা একটি ব্যাপার বুঝতেই পারেনি, বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবে হত্যা করা যায়, তাঁর আদর্শকে হত্যা করা যায় না, তাঁর চেতনাকে হত্যা করা যায় না।’ এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর নামে প্রতিটি স্টেটে একটি করে সড়ক আছে এবং এটা প্রধান সড়ক। সবচেয়ে বড় ও লম্বা কানেকশনের যে প্রধান সড়ক সেটিই মহাত্মা গান্ধীর নামে। সেটিকে এম জি রোড বলা হয়, কলকাতায়ও সেটা আছে। আমাদের বাংলাদেশে জাতির পিতার নামে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ করেছি, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু রোড আছে। কিন্তু অন্য কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।’ আ ব ম ফারুক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে ঔষধ প্রশাসন পরিদফতর তৈরি করলেন। ওষুধ কোúানিকে সকল প্রকার কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তার নির্দেশও দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর হাত ধরেই আজ বাংলাদেশ ওষুধশিল্প স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আমাদের চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধই দেশে উৎপাদন হয়।’ ম. হামিদ বলেন, ‘সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টি ছিল। তিনি যৌবনকাল থেকেই সংস্কৃতিকে পৃষ্ঠপোষকতার চেষ্টা করেছেন।’ এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে লন্ডন হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশে ফেরার পথে ভারতের দিল্লিতে যাত্রাবিরতি করেছিলেন। তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি বলেছিলেন আপনি মানুষের মুক্তি ও মানবিক স্বাধীনতার জন্য কষ্ট ও আত্মত্যাগের শাশ্বত চেতনার মূর্ত প্রতীক।’ পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতির জায়গাটি বঙ্গবন্ধু ধারণ করেছিলেন। আজ আমাকে এভাবে কথা বলার অধিকারও দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সব সময় সাধারণের মধ্যে থেকে সাধারণের কথা বলতেন।’ অধ্যাপক আখতার হোসেন বলেন, ‘যুদ্ধের ফলে আমাদের দেশটি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গিয়েছিল। সে সময় অসীম সাহসে বঙ্গবন্ধু আমাদের দেশের হাল ধরলেন। তিনি আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজালেন।’ অধ্যাপক এ কে এম শাহনাওয়াজ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর লেখা বই থেকে আমরা গবেষণা করতে পারছি।’ অধ্যাপক ড. নাছিম আখতার বলেন, ‘মুজিব মানে মুক্ত জীবনের বন্দনা। বাঙালির মুক্ত জীবনের বন্দনাই তাঁর আরাধ্য বিষয় ছিল।’ অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুই প্রথম বলেছিলেন ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার দেওয়া।’ ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে বঙ্গবন্ধুর অবদান বলে শেষ করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু যে সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় ছিলেন সে সময়ই তিনি স্বাস্থ্য খাতের মূল ভিত্তি দাঁড় করিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন।’ ইকরামউজ্জমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন ক্রীড়ানুরাগী ও ক্রীড়াপিপাসু ব্যক্তিত্ব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর