দিনাজপুরে শ্রীশ্রী কান্তজিউ বিগ্রহ প্রায় ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাজ পরিবারের প্রথা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নদীপথে পুলিশি পাহারায় শুক্রবার সকালে কান্তনগর মন্দির থেকে যাত্রা করে। শ্রী শ্রী কান্তজিউ বিগ্রহ প্রায় ২৫ কিলোমিটার নৌপথে বিভিন্ন নদীর ঘাটে ভক্তদের পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে রাতে পৌঁছে। শুক্রবার ভোরে হাজারো ভক্তের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন নদীর ঘাট এলাকা।
সকাল সাড়ে ৭টায় দিনাজপুরের কাহারোলের কান্তনগরে শ্রী শ্রী কান্তজিউ বিগ্রহ নৌপথে দিনাজপুর শহরের রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রার উদ্বোধন করেন হিন্দুকল্যাণ ট্রাস্টের সহসভাপতি মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি। ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দির থেকে পূজা-অর্চনা শেষে কান্তজিউ বিগ্রহ ঢেপা নদীর কান্তনগর ঘাটে আনা হয়। পরে নৌবহর নিয়ে দিনাজপুর শহরের সাধুর ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হিন্দু পুণ্যার্থীরা তাদের বাড়ির বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি শ্রী শ্রী কান্তজিউ বিগ্রহকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে আসেন। এ সময় নদীর দুকূল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুরঘাট পর্যন্ত ৩০টি ঘাটে কান্তজিউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভেড়ানো হয়। এ কারণে বিভিন্ন ঘাটে ও শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। রাত সাড়ে ৮টায় কান্তজিউ বিগ্রহ সাধুঘাটে এসে পৌঁছালে দিনাজপুর রাজদেবোত্তর এস্টেটের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিগ্রহ গ্রহণ করবেন। পরে বিগ্রহটি শহরের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা-অর্চনা শেষে দিনাজপুরের রাজবাড়ি কান্তজিউ মন্দিরে স্থাপন করা হবে। মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি বলেন, রাজ পরিবারের রীতি অনুযায়ী কান্তজিউ বিগ্রহ ৯ মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে অবস্থান করে। সেই প্রথা যুগযুগ ধরে চলে আসছে। এ তিন মাসে রাজবাড়িতে প্রতিদিন প্রভাতী নামকীর্তন ও প্রতি বাংলা মাসের প্রথম শনিবার কমিটির পক্ষ থেকে ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টায় শ্রী শ্রী কান্তজিউ বিগ্রহ দিনাজপুরের রাজবাড়ি কান্তজিউ মন্দিরে স্থাপন করা হয়। উল্লেখ্য, প্রায় ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ পূজা প্রতি বছর আয়োজন করা হয় পুনর্ভবা নদীর কান্তনগর ঘাটে।