সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

এবার ডেঙ্গুর ডেনভি-৩ টাইপে আক্রান্ত মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ডেঙ্গু ভাইরাসের ডেনভি-৩ ধরনে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। ২০ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যেকে ডেঙ্গু ভাইরাসের ডেনভি-৩ ধরনে আক্রান্ত বলে প্রমাণ মিলেছে।

গতকাল ডেঙ্গু ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফতাব আলী শেখ বলেন, ডেঙ্গুর মিউটেশন সংক্রান্ত তেমন গবেষণা না থাকায়  এসব মিউটেশনে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাব শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। রাজধানীর শুধু একটি হাসপাতাল থেকে জুলাই মাসে আক্রান্ত ২০ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে সিকোয়েন্সিং করা হয়েছে। সারা দেশে ডেঙ্গুর বিস্তৃতি জানার জন্য আরও অধিক সংখ্যক জিনোম সিকোয়েন্সিং করা প্রয়োজন। এই ভাইরাসের জীবন রহস্য উন্মোচনের ফলে সহজে এর চিকিৎসা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংস্থাটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক সেলিম খান। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০টি নমুনার সিকোয়েন্সিং করে দেখেছি, প্রতিটি ডেনভি-৩। এই সেরোটাইপ-৩ এর মাধ্যমে ঢাকার রোগীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, দেশে গত ১০ বছরে ডেনভি-১ ও ২ সেরোটাইপে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এবার দেখা যাচ্ছে ডেনভি-৩ ধরনই বেশি। দেশে এই ধরন প্রথম শনাক্ত হয় ২০১৭ সালে। যারা ডেনভি-১, ২-এ আক্রান্ত হয়েছে আগে তারা নতুন করে ডেনভি-৩ আক্রান্ত হলে সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছে। তাই এবার মৃত্যু বেশি হচ্ছে। প্রথমবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে জ্বর ছাড়া তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ হয় না। কিন্তু দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে এই ভাইরাসে মৃত্যুহার বেড়ে যাবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান।

গতকাল দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২৫২ জন। আগস্টের ২৯ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ১৯৯ জন, মারা গেছেন ৩০ জন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৮৫৭ জন, মারা গেছেন ৪২ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালে ১ লাখের বেশি মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে বছর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আসা ২৬৬টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১৪৮ জনের ডেঙ্গুতে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছিল আইইডিসিআর। এর পরের বছর এর প্রকোপ কিছুটা কম দেখা যায়। এর আগে ২০০০ সালে ডেঙ্গুতে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বছর এই রোগে আক্রান্ত হয় ৫ হাজার ৫৫১ জন। এ ছাড়া ২০১৮ সালে আক্রান্ত ১০ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

সর্বশেষ খবর