সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

জোরালো হচ্ছে বাইডেনের পদত্যাগ দাবি

প্রতিদিন ডেস্ক

কাবুল বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটায় যুক্তরাষ্ট্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়েছে। সরকারের ভিতরে-বাইরে এ দাবি এখন সরব হয়ে উঠেছে। সূত্র : ফক্স নিউজ, দ্য নিউজ অ্যান্ড অবজারভার।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি গতকাল টুইট করে বলেছেন, ‘বাইডেন  কি এবার পদত্যাগ করবেন, নাকি তাকে সরানো হবে? তবে বাইডেন সরে গেলে যদি কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হন- তাহলে তা দশগুণ খারাপ হবে। স্রষ্টা আমাদের রক্ষা করুন।’ নিক্কির এই টুইটের পর রিপাবলিকান পার্টির একাধিক কংগ্রেস ম্যান টুইট করে বাইডেনের পদত্যাগ দাবি করতে থাকেন। বাইডেনের সঙ্গে সঙ্গে তারা কমলা হ্যারিস ও বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনেরও পদত্যাগ দাবি করেন। রিপাবলিকান সংসদ সদস্যরা বলতে থাকেন, ‘যদি একটা ফোনের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হয়ে থাকে, তাহলে কেন বাইডেনের ইমপিচমেন্ট হবে না?’ আফগানিস্তান থেকে যেভাবে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা বাইডেনের চরম গাফিলতি বলে রিপাবলিকান দলের নেতারা জানাতে থাকেন। খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার কাবুলের বিস্ফোরণে ১৩ মার্কিন সেনার মৃত্যু বাইডেনকে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে। তালেবান যেভাবে আফগানিস্তান নিজেদের দখলে নিয়েছে, তাতে গোটা বিশ্বের সঙ্গে মার্কিন জনতারও একটি বড় অংশ বাইডেনের ওপর ক্ষুব্ধ। কাবুলের বিস্ফোরণ সেই ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ক্ষমতা গ্রহণের আট মাসের মাথায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তা দ্রুত নিচের দিকে নামছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা ছাড়াও অন্যান্য বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্রের লোকজন বাইডেনের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন। গত জুনে জাতীয় জনমত জরিপে বাইডেনের ওপর আমেরিকার ৫৪ শতাংশ লোকজনের আস্থা রয়েছে বলে দেখা যায়। এরপর প্রতি মাসেই জনমত জরিপে তাঁর জনপ্রিয়তার হার কমেছে। আগস্টের শেষ দিকে এসে তাঁর প্রতি জনগণের আস্থা ৪৭ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। শুধু আফগান পরিস্থিতিই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে মহামারী মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার দায়ও এখন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাঁধে এসে পড়তে শুরু করেছে। কারণ ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালে করোনা মহামারী মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছেন বলে অধিকাংশ আমেরিকান রায় দেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে বাইডেন মহামারী মোকাবিলাকেই তাঁর প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের আগেই ৭০ শতাংশ লোকজনকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। কিন্তু তাঁর এ লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। উল্টো যুক্তরাষ্ট্রে এখন নতুন করে করোনার ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৩২ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় মারা গেছেন। স্বাস্থ্যসেবীদের আশঙ্কা, বছর শেষ হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আরও ১ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ফলে মহামারী মোকাবিলা নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা হচ্ছে। অপর দিকে ট্রাম্পের আমলের কঠিন অভিবাসন নিয়ম সহজ করায় রক্ষণশীলরা বাইডেনের প্রচ- বিরোধিতায় নেমেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত খুলে দিয়েছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধী ও নথিপত্রহীন লোকজন ঢুকছে। এতে আমেরিকার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। সূত্রগুলো আরও বলছে, বহুমুখী সমস্যার চাপে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য সময় বড্ড খারাপ হয়ে উঠেছে। সার্বিক বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে কিছু একটা করতে না পারলে আগামী মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের ভরাডুবি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর