বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

২ বিঘা জুড়ে কাকের গ্রাম

আবদুল বারী, নীলফামারী

২ বিঘা জুড়ে কাকের গ্রাম

নীলফামারী শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ইটাখোলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়া। দুই পাড়ার ২ বিঘা জমিজুড়ে বাঁশঝাড়। আর এই বাঁশঝাড়েই কালো কাকের বসতি। লোকে বলে এটা কাকের গ্রাম, কেউ বলে কাকের পাড়া।

নীলফামারী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি আবু মুসা মাহামুদুল হক বলেন, এলাকার মানুষের সঙ্গে কাকের সখ্য গড়ে উঠেছে। কাকগুলো দলবেঁধে বাঁশঝাড়ে পড়ার কারণে কোনো বাঁশেরই আগা নেই। যখন ফিরে আসে তখন এক অপরূপ দৃশ্যে মন ভরে যায়। কাকের কা কা শব্দে ভরে ওঠে পুরো এলাকা। কালো কুচকুচে এসব কাক ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে বলে এই জায়গাটিকে নিরাপদ বাসস্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। এদের একতা মানুষকেও হার মানায়। একটি কাক আহত হলে বা কেউ ধরতে চাইলে- সব কাক সম্মিলিতভাবে আক্রমণ করে।

পলাশবাড়ী কলেজের প্রভাষক মো. জাফর সাদেক বলেন, কাক অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও চতুর পাখি। এরা যূথচর, মাঝে-মধ্যে খুব বড় দলেও থাকে, কিন্তু একত্রে ঘুমায় না। প্রত্যেক জোড়ার পৃথক বাসা থাকে। বাসা খুব সাধারণ, ডালপালার একটি মাচান। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ই বাসা তৈরি করে, বাচ্চাদের খাওয়ায়। কাক একটি অতি পরিচিত পাখি অর্থাৎ আমাদের পরমবন্ধু। প্রতিদিন ভোর হয় কাকের ডাকে। রাত শেষে যখন ভোরের আগমনী বার্তা আসে তখন কাক তার কা কা কণ্ঠে ভোরকে আহ্বান জানায়। অন্য সব পাখির মতো কাক হয়তো অত সুন্দর নয়। কিন্তু কাক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অনেক গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামের হিরা চৌধুরী বলেন, এই বাঁশঝাড়ে প্রায় ৫০ বছর ধরে কাকেরা নিরাপদে বসবাস করছে। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো যে, খুব ভোরে এসব কাক খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে গেলেও সন্ধ্যা হওয়ার আগেই ঝাঁকে ঝাঁকে ফিরে আসে বাঁশঝাড়ে। এখানে কেউ ইচ্ছা করে কাকের বাসায় ঢিলও মারে না।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর