বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ক্যাপ্টেন নওশাদের লাশ আসছে কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউয়ুমের লাশ আগামীকাল দেশে আসছে। এজন্য বিমানের ঢাকা-দোহা রুটের পরিকল্পনায় আংশিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ দোহা থেকে ফিরতি পথে নাগপুর হয়ে ঢাকায় আসবে বিমানের একটি ফ্লাইট। এ ফ্লাইটেই আসবে ক্যাপ্টেন নওশাদের লাশ। সঙ্গে ওই ফ্লাইটে নাগপুরে থাকা তার দুই বোনকেও ফিরিয়ে আনা হবে।

বিমান জানায়, বিমানের আজকের দোহাগামী ফ্লাইট বিজি০২৫ ঢাকা থেকে উড়াল দেবে দুপুর সাড়ে ১২টায়। দোহায় পৌঁছাবে স্থানীয় সময় ৫টা ৪০ মিনিটে। ফিরতি পথে দোহা থেকে উড়াল দেবে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায়। সেটি নাগপুর পৌঁছাবে রাত সাড়ে ১১টায়। সেখান থেকে ভোর ৫টায় রওনা হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করবে।

নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে কয়েকদিন ধরে চিকিৎসাধীন নওশাদকে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালটির হিমঘরে রাখা হয়েছে তার লাশ। শুক্রবার সকালে ওমানের মাসকাট থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে ঢাকায় ফেরার পথে মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন নওশাদ। এ সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। এমন পরিস্থিতিতে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি ভারতের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ১২৪ জন। পরে জানা যায়, নওশাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। ওই দিন রাতেই বিকল্প পাইলট ও ক্রু পাঠিয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। আর নওশাদকে ভর্তি করা হয় নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে। কিংসওয়ে হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসেস পরিচালক ডা. সুভরজিৎ দাশগুপ্ত, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিশিয়ান ডা. রঞ্জন বারোকার ও ডা. বীরেন্দ্র বেলেকারের অধীন চিকিৎসা চলছিল নওশাদের। তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন তিনি। ক্যাপ্টেন নওশাদের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল সরকার থেকে। সরকার তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। এর আগে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ একটি ফ্লাইট নিরাপদে অবতরণ করিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হন পাইলট নওশাদ। বিজি-১২২ ফ্লাইটটিতে যাত্রী ছিলেন ১৪৯ জন, ক্রু ছিলেন সাতজন এবং কো-পাইলট ছিলেন দুজন। বলতে গেলে নওশাদের দক্ষতায় বেঁচে যায় তাদের জীবন।

ওই বিমানটিও ওমান থেকে বাংলাদেশে এসেছিল। বিমান বাংলাদেশের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি মাসকাট থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে উড়াল দেওয়ার পর সেখানকার কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ক্যাপ্টেন নওশাদকে জানানো হয়, রানওয়েতে টায়ারের কিছু অংশ পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত বিমানের এয়ার ক্রাফটের হতে পারে। পাইলট নওশাদ যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিমানটি চট্টগ্রামে না নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালালে জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। অবতরণের আগে ক্ষতিগ্রস্ত টায়ারের বিষয়ে নিশ্চিত হতে রানওয়ের ওপর দুবার লো-লেভেলে ফ্লাই করেন নওশাদ। তখন দেখা যায় উড়োজাহাজের পেছনের ২ নম্বর টায়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি নিশ্চিত হওয়ার পর দক্ষতার সঙ্গে ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করেন নওশাদ। এ কৃতিত্বে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি। তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনপত্র পাঠায় আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশন।

সর্বশেষ খবর