বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
মুক্তিপণ দাবির মামলা

তিন সিআইডি সদস্যের জামিন নামঞ্জুর

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরে মা-ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় মামলার আসামি রংপুর সিআইডি অফিসের এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান, কনস্টেবল আহসান উল হক ফারুক ও মাইক্রোবাস চালক হাবিবের জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত।

গতকাল দুপুরে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। এ সময় দিনাজপুর আদালতের পুলিশের এসআই সবুজ আলী জামিনের  বিরোধিতা করেন। পরে বিজ্ঞ বিচারক শিশির কুমার বসু তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে রাখার আদেশ দেন। এ ব্যাপারে দিনাজপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গতকাল সকালে আদালত শুরুর সময় ওই চারজনের জামিন আবেদন করা হয়। বিচারক জামিন দেননি। এর আগে ২৬ আগস্টও সিআইডির ওই তিন সদস্যের জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছিল। যেহেতু করোনাকালে সশরীরে আদালতে উপস্থিত আইনসিদ্ধ না, তাই আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়নি। এর আগে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আত্মগোপনে থাকা ২৯ আগস্ট মা-ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলমের বাবা লুৎফর রহমানকে আদালতের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এএসপি, এএসআইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে দিনাজপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এদিকে রংপুর সিআইডি পুলিশের এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান উল হক ফারুককে গত ২৮ আগস্ট বিকালে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে রংপুর সিআইডি পুলিশের এএসপি সারোয়ার কবীর সোহাগের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। এই মামলায় মোট ছয়জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার ১০ জনের নাম ছাড়াও আরও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান উল হক ফারুক, মাইক্রোবাস চালক হাবিব, নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার এনামুল হকের ছেলে ফসিহ উল আলম পলাশ আদালতের নির্দেশে কারাগারে রয়েছেন। মামলার বাকি পাঁচ আসামি পলাতক রয়েছে- চিরিরবন্দর উপজেলার আন্ধারমুহা গ্রামের মৃত এন্তাজুল হকের ছেলে আরেফিন শাহ, শহরের ৬ নম্বর উপশহর খেরপট্টি এলাকার সোহেল, সুইহারী চৌরঙ্গী বাজারের রিয়াদ, ২ নম্বর উপশহর এলাকার সুমন ও ৩ নম্বর উপশহর এলাকার জাহিদ। উল্লেখ্য, রংপুর সিআইডির কাছে পলাশ নামের এক ব্যক্তি চিরিরবন্দর উপজেলার লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় লুৎফরের বাড়িতে যান এএসপি সারোয়ার কবিরসহ তিনজন। লুৎফরকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও ছেলেকে একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে মুক্তিপণ দাবি করেন। তারা পরিবারের লোকজনকে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে এ ঘটনায় থানা পুলিশের কাছে যান ভুক্তভোগীর স্বজনরা। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর স্বজনরা সাড়ে ৮ লাখ টাকা নিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করতে চান। তারা প্রথমে রানীরবন্দর আসতে বলেন। সেখানে এলে তাদের টাকা নিয়ে দিনাজপুর সদরের দশমাইল আসতে বলা হয়। আবার দশমাইল আসলে সদরের বাঁশেরহাট আসতে বলে। পরে বিকাল ৫টায় দিনাজপুর সদরের দশমাইল এলাকায় জনতার সন্দেহ হলে মাইক্রোবাসটি আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে দিনাজপুর জেলা পুলিশ ও সিআইডি মিলে সদরের বাঁশেরহাট থেকে তাদেরকে আটক করে। পরে জানা যায় অপহরণকারীরা পুলিশের সিআইডির কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর