বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনার আরও দুই শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনার আরও দুই শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট

গবেষকরা করোনাভাইরাসের আরও দুটি শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেছেন। এর একটির নাম সি-১-২ (C.1.2) এবং আরেকটি ‘মু’ বি.ওয়ান.৬২১। এ দুটিই করোনার টিকাকে হার মানাতে সক্ষম। হিন্দুস্তান টাইমস, সিএনএন।

খবরে বলা হয়, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট সি-১-২ ((C.1.2)  শনাক্ত হয়েছে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট হার মানাতে পারে টিকাকেও। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বেশ কিছু দেশে এরই মধ্যেই এ ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে। এক গবেষণা অনুযায়ী, এটি অনেক বেশি সংক্রামকও। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজেস এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল রিসার্চ ইনোভেশন অ্যান্ড সিকোয়েন্সিং প্ল্যাটফরমের বিজ্ঞানীরা এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের কথা জানিয়েছেন। চলতি বছর মে মাসে খোঁজ মেলে এই নতুন C.1.2 ভ্যারিয়েন্টের। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ আগস্ট পর্যন্ত চীন, কঙ্গো, মরিশাস, ব্রিটেন, নিউজিল্যান্ড, পর্তুগাল এবং সুইজারল্যান্ডে C.1.2 পাওয়া গেছে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট C.1-এর তুলনায় বেশি শক্তিশালী। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার প্রথম ঢেউয়ের অন্যতম কারণ ছিল এই C.1 ভ্যারিয়েন্ট। গবেষকরা বলেছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টটির অনেক বেশি মিউটেশন রয়েছে। বিশ্বজুড়ে প্রাপ্ত ভ্যারিয়েন্টস অব কনসার্ন এবং ভ্যারিয়েন্টস অব ইন্টারেস্টের তুলনায় এটির মিউটেশন অনেকটাই বেশি।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, C.1.2 সংক্রান্ত এখন পর্যন্ত যা পরিসংখ্যান মেলেছে, তার থেকেও বেশি ছড়িয়ে থাকতে পারে এই ভ্যারিয়েন্ট। কারণ প্রতিনিয়তই এর বৃদ্ধি ঘটছে। গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতি মাসে C.1.2 জিনোমের সংখ্যা ধারাবাহিক বৃদ্ধি পেয়েছে। মে মাসে সিকোয়েন্স করা জিনোমের ০.২ শতাংশ ছিল এটি। জুন মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১.৬ শতাংশে। তারপর জুলাইয়ে বৃদ্ধি পেয়ে ২ শতাংশ হয়েছে। গবেষণার লেখকরা বলেছেন, ‘এই বৃদ্ধির হার প্রাথমিক শনাক্তকরণের সময়ে বিটা এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বৃদ্ধির অনুরূপ।’ কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজির ভাইরোলজিস্ট উপাসনা রায় জানান, এটি বেশি সংক্রামক হতে পারে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু স্পাইক প্রোটিনে অনেকগুলো মিউটেশন রয়েছে, এর ফলে এটি প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে রক্ষা পেতে পারে। এভাবে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী টিকা অভিযানের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) বলেছে, তারা করোনার ‘মু’ নামের একটি নতুন ধরন পর্যবেক্ষণ করছে। এটি গত জানুয়ারিতে কলম্বিয়ায় প্রথম শনাক্ত হয়। সংস্থার মহামারী বিষয়ক সাপ্তাহিক বুলেটিনে গত মঙ্গলবার বলা হয়, বৈজ্ঞানিকভাবে ‘মু’ বি.ওয়ান.৬২১ হিসেবে পরিচিত।

একে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনার এই ধরন টিকা প্রতিরোধের ঝুঁকি তৈরি করছে। যদিও এ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরই মধ্যে আলফা ও ডেল্টাসহ চার ধরনের কভিড-১৯ শনাক্ত করেছে। বিশ্বের ১৯৩টি দেশে আলফা এবং ১৭০টি দেশে ডেল্টা ধরন ছড়িয়েছে। ‘মু’সহ পঞ্চম ধরন পর্যবেক্ষণে রয়েছে। কলম্বিয়ায় ‘মু’ শনাক্ত হওয়ার পর ইউরোপসহ দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশেও এটি ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থাটি।

সর্বশেষ খবর