বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বালুবাড়ীতে বক পানকৌড়ির বসতি

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

বালুবাড়ীতে বক পানকৌড়ির বসতি

দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ী শহীদ মিনার এলাকা। রয়েছে বড় বড় অসংখ্য গাছ। আর সেগুলোতে শত শত পানকৌড়ি আর বক পাখিদের বসতি। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে মানুষের।

উঁচু গাছগুলোর দিকে তাকালেই দেখা যায় শত শত পানকৌড়ি আর বক। এটা এদের নিরাপদ প্রজনন আবাসস্থলও। এখানেই জন্ম নিচ্ছে বাচ্চা। সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঁঠাল, আম, নিম, মেহগনিসহ বিভিন্ন গাছের ডালে ডালে বাসা বেঁধেছে শত শত সাদা বক ও কালো পানকৌড়ি।  বৈশাখের প্রথম সপ্তাহ থেকে এসেছে এসব পাখি। স্থানীয়রা জানান, প্রজনন শেষে বাচ্চাগুলো বড় হওয়ার পর ভাদ্র মাসে চলে যায় এরা। প্রজননের জন্য আসা এ অতিথি পাখিদের দারুণ ভালোবাসেন স্থানীয়রা।

দেখা গেছে, পাখীদের কোনটি উড়ছে, কোনটি ডাকছে। সকালে আর বিকালে পাখিদের আনাগোনায় মন জুড়িয়ে যায়। পরিবেশ বান্ধব বিকেল বেলায় পাখিদের কলকাকলিতে প্রকৃতি অন্যরকম আবহ ফুটিয়ে তোলে। সকাল হলেই মা পাখিরা খাবারের সন্ধানে উড়ে যায়, আবার সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ফিরে আসে নীড়ে। সন্ধ্যার দিকে গাছগুলোর দিকে তাকালে মনে হয় শাখা-প্রশাখা জুড়ে সাদা-কালো ফুল। তবে ওরা নড়ে-চড়ে, ওড়ে, ডাকে। তখন ভুল ভাঙে যে, এগুলো ফুল নয়, সাদা-কালো বক আর পানকৌড়ি। পাখির ওড়াউড়ি, মা পাখির বাচ্চাকে খাওয়ানো আর বাবা পাখির সারাদিন পাহারা দেওয়ার দৃশ্য সবাইকে মুগ্ধ করে। স্থানীয় মোস্তফা, মাহফুজসহ অনেকে বলেন, এরা বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আসতে শুরু করে এবং ৫ মাস অবস্থান করে প্রজনন শেষে চলে যায়।

শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পুনর্ভবা, আত্রাই, গাবুরা নদীসহ খাল-বিল আর ফসলের মাঠ থেকে নানা জাতের মাছ, পোকামাকড় ও শামুক-ঝিনুক খেয়ে জীবন বাঁচে পাখিগুলোর। কেউ তাদের বিরক্ত করে না। তাই এখানে নিরাপদ আশ্রয়ে বাসা বেঁধে ডিম দেয় এবং তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায় তারা। মা পাখিরা খাবার সংগ্রহ করে এনে মুখে তুলে দেয় বাচ্চা পাখির। সন্ধ্যায় মা পাখিরা যখন ঘরে ফেরে তখন শত শত পাখির ডাকে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পাখির কলকাকলি উপভোগ করতে হলে আসতে হবে ভোর ৬টার আগে বা সন্ধ্যা ৬টার পরে। সকাল আর সন্ধ্যায় পাখির কলকাকলি বিশেষ  এক আবহ তৈরি করে। সাবেক কাউন্সিলর ও বর্তমান জেলা পরিষদের সদস্য ফয়সল হাবিব সুমন বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনের গাছে গাছে বক ও পানকৌড়ি বাসা বেঁধেছে। পাখিগুলোকে যেন কেউ মারতে বা বিরক্ত করতে না পারে- সেজন্য সবাই সচেতন থাকি এবং অন্যদের সচেতন করি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর