সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

তালেবানের গাড়িতে দফায় দফায় বোমা হামলা, নিহত ৭ আহত ৩০

আফগানিস্তানে নারীদের চাকরি নিষিদ্ধ করল তালেবান

প্রতিদিন ডেস্ক

আফগানিস্তানে বিনা বাধায় ক্ষমতা দখলকারী তালেবান  যোদ্ধারা এবার গেরিলা স্টাইলে হামলার শিকার হওয়া শুরু করেছেন। গতকাল রাজধানী কাবুল এবং পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদে তালেবানদের টহল গাড়ির ওপর বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ তালেবান নিহত এবং অন্তত ৩০ তালেবান যোদ্ধা আহত হয়েছেন। এর দুই দিন আগে কাবুলের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর রকেট হামলাও চালানো হয়েছিল। এদিকে গতকাল নতুন এক নির্দেশে আফগানিস্তানে নারীদেরকে চাকরিস্থলে না যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা যেন চাকরিতে না গিয়ে ঘরে বসে থাকে। সূত্র : আল জাজিরা, ব্লুমবার্গ, রয়টার্স।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, রাজধানী কাবুল ও পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদে গতকাল দফায় দফায় বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এতে ৭ তালেবান যোদ্ধা নিহত ও অন্তত ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালেবানের এক নেতা জানিয়েছেন, নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদে তালেবানের গাড়ি লক্ষ্য করে পরপর চারটি বোমা হামলা চালানো হয়েছে। শনিবার রাতেও এ রকম হামলা হয়। এতে নারী-শিশুসহ অনেকে হতাহত হন। নানগারহার প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, হামলায় নিহতের সংখ্যা তিনজন এবং আহত হয়েছেন ১৮ জন। সূত্র জানায়, রাজধানী কাবুলে গতকালের বোমা হামলায়ও বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। তবে কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নানগারহারে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শক্ত অবস্থা রয়েছে। সে কারণে সন্দেহের তীর তাদের দিকেই। তালেবানের একটি সূত্র বলছে, জালালাবাদ ও কাবুলে হামলার পেছনে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) খোরাসান শাখার হাত থাকতে পারে। হামলার পরপরই জালালাবাদ থেকে সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তালেবানের ওই শীর্ষ নেতা বলেন, হামলার ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে এবং হামলাকারীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ও আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার পর এটাই তাদের ওপর বড় ধরনের হামলার ঘটনা।

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ঘটনা ফাঁস : তালেবানের অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যেই চলতি মাসের শুরুতে কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রসাদে সরকার চূড়ান্ত করা নিয়ে বসেছিলেন তালেবানের শীর্ষ নেতারা। লক্ষ্য ছিল কারা মন্ত্রিত্ব পাবে, কবে শপথ গ্রহণ হবে- এসব ঠিক করা। কিন্তু বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ তো দূরে থাক আলোচনায় বসতেই শুরু হয়ে যায় তুমুল বাগ্বিতন্ডা। পরে এ বিতন্ডা রূপ নেয় হাতাহাতিতে। এ সময় সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গণি বারাদারকে ঘুষি মারতে থাকেন হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খলিল-উর-রহমান হাক্কানি। ফাঁস হওয়া খবর থেকে আরও জানা গেছে, আলোচনার সময় সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ একটি মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য জোর দিচ্ছিলেন বারাদার। তখন আফগান শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী হাক্কানি চেয়ার থেকে উঠে বারাদারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেখানে থাকা তাদের দেহরক্ষীরাও পরস্পরের সঙ্গে মারপিটে জড়িয়ে পড়েন। সবশেষে শুরু হয় উভয় পক্ষে গোলাগুলি। এতে কয়েকজন নিহত এবং অনেকে আহত হন। এ সময় বারাদারও গুলিবিদ্ধ হন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি কোণঠাসা অবস্থায় তখনই সঙ্গীদের সহায়তায় কান্দাহারে চলে যান। এখন পর্যন্ত তিনি সেখানেই রয়েছেন। তবে তিনি ‘আহত হননি’ বলে এরই মধ্যে বিবৃতিও দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর