সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

টি-শার্টের লেখায় ছিল হত্যারহস্য

মিরপুরে ড্রামে লাশ বন্ধুসহ গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুরের লাভ রোড এলাকায় ড্রাম থেকে উদ্ধার লাশের পরিচয় শনাক্তসহ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। নিহত যুবকের নাম জুয়েল রানা। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। পণ্য ডেলিভারির টাকা আত্মসাৎ করতেই মূলত তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জুয়েলের বন্ধুসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিহতের গেঞ্জিতে থাকা একটি লেখার সূত্র ধরে হত্যা রহস্য উদ্্ঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি এ এস এম মাহাতাব উদ্দিন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরের সেকশন-২ লাভ রোডে মিরপুর হাউজিং এস্টেটের বিপরীত পাশ থেকে অজ্ঞাত হিসেবে নীল রঙের ড্রামের ভিতর থেকে জুয়েলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গতকাল মিরপুরে ডিসি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা মাহাতাব বলেন, লাশ উদ্ধারের পর কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তী সময়ে পরনের গেঞ্জিতে থাকা একটি লেখা ‘সাফল্যের পথে একসাথে’র সূত্র ধরে জুয়েলের পরিচয় জানা যায়। তদন্তে নেমে হত্যাকান্ডে জড়িত হিসেবে তিনজনকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল জব্দ করা হয়।

দুটি পৃথক প্রতিষ্ঠানে ডেলিভারিম্যান হিসেবে চাকরি করতেন জুয়েল ও মিরাজ। তারা আগে থেকেই পরিচিত ও বন্ধু ছিলেন। টাকার প্রয়োজন হলে লোভে পড়ে বন্ধু জুয়েলের পণ্য ডেলিভারির টাকা আত্মসাৎ করতে ফাঁদ পাতেন মিরাজ। ডেলিভারির ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেওয়ার জন্যই মূলত জুয়েলকে হত্যা করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নিজে এ ঘটনা ঘটাতে সাহস না পাওয়ায় তার পরিচিত সাইফুল ও রাসেলকে সঙ্গে নেন মিরাজ। তারা তিনজন জুয়েলকে তাদেরই প্রতিষ্ঠানের একটি কাভার্ড ভ্যানে ওঠান। একপর্যায়ে টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সঙ্গে থাকা রশি জুয়েলের গলায় পেঁচিয়ে তারা তাকে হত্যা করে।

লাশের পরিচয় যেন শনাক্ত না হয় সে জন্য ড্রামে ভরে মিরপুরের লাভ রোডের হাউজিং এস্টেটের সরকারি অফিসের বিপরীতে একটি জায়গায় ফেলে যায় খুনিরা। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসাম্মৎ সালমা আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় দুই বন্ধুসহ জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়।

মিরপুর বিভাগের এডিসি মো. মাহবুবুর রহমান জানান, হত্যার আগে মিরাজ ও সাইফুল পরিকল্পিতভাবে জুয়েলকে সঙ্গে নিয়ে ইয়াবা সেবন করেন। পরে তাকে রশি দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ড্রামে ভরে ফেলে দেওয়া হয়। আসামিরা জুয়েলকে হত্যা করে ৭৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। নিহতের পরনে থাকা টিশার্টে লেখা ‘সাফল্যের পথে একসাথে’র সূত্র ধরে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। হত্যায় ব্যবহৃত রশি, পিকআপ ভ্যান, ৭ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর