সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্যরা লুট করা সোনা গলিয়ে ‘পাত’ বানিয়ে বিক্রি করত। ঢাকার আশুলিয়া ও রাপা প্লাজায় ডাকাতি মামলা তদন্তে লুট করা সোনার বিষয়ে এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ৬ সেপ্টেম্বর রাতে আশুলিয়ার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নয়ারহাট বাজারে ১৯টি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়। এ সময় ৩০ থেকে ৪০ জন সশস্ত্র ডাকাত সোনা, নগদসহ মোট ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার টাকার মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় ধারাবাহিক অভিযানে ১১ জনকে গ্রেফতারের পর এমনই চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছে সিআইডি। গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, লুট করা সোনা রাজধানীর তাঁতীবাজারে অবৈধভাবে বেচাকেনার সুস্পষ্ট তথ্য রয়েছে সিআইডির কাছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লুট করা সোনা গলিয়ে ‘পাত’ বানিয়ে তাঁতীবাজারে বিক্রি করত একটি চক্র। আশুলিয়ার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে নেমে ১৫ সেপ্টেম্বর শাহানা আক্তার নামে এক ডাকাতের স্ত্রীকে সোনা বিক্রির ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৪০ টাকা এবং ৩ থেকে ৪ ভরি সোনাসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আল মিরাজ মিন্টু, কামাল খান, আনোয়ার হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন খলিফা, আবদুর রহিম, সাগর, সবুজ রায়কে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে শাহানা, আনোয়ার, দেলোয়ার, সবুজ, রহিম, আল মিরাজ ও কামাল খান আশুলিয়ায় ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকার ডাকাত সদস্য রহিমের বাসা থেকে আশুলিয়ায় লুট হওয়া ২০ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১৪ লাখ টাকা। সিআইডির কর্মকর্তা মুক্তা ধর বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানমন্ডির রাপা প্লাজার রাজলক্ষী জুয়েলার্সে ডাকাতি হয়। এ সময় প্রায় ২০০ ভরি সোনা লুট করা হয়, যার বাজারমূল্য ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আশুলিয়ার ঘটনায় গ্রেফতার সবুজ রায়, রহিমসহ আরও পাঁচ-ছয় জন রাপা প্লাজায় ডাকাতির কথাও স্বীকার করেছেন। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নয়াবাজারে সবুজের বাসা থেকে রাপা প্লাজায় লুট হওয়া ১২ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লুট করা সোনা গলিয়ে ‘পাত’ বানিয়ে তাঁতীবাজারে বিক্রি করত একটি চক্র, যা সবুজ ও রহিমের জবানবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে।
