শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

দুর্লভ প্রজাতির কেলিকদম্ব উদ্ভিদ

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

দুর্লভ প্রজাতির কেলিকদম্ব উদ্ভিদ

বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় কেলিকদম্ব উদ্ভিদে ফুল ফুটেছে। বর্ষার শেষে বা শরতের শুরুতে এ উদ্ভিদে ফুল ফোটে। ফুলটি কদমের মতো কিন্তু অতিক্ষুদ্র ও মাধুর্যময়। তবে এখনো কেউ এ গাছের ফুল ফুটতে দেখেননি। আবার গাছটি নিয়ে রয়েছে নানা পৌরাণিক কথা। দুর্লভ এ কেলিকদম্ব উদ্ভিদটি দিনাজপুর সরকারি কলেজের উত্তর-পশ্চিম কোণে জীববিজ্ঞান ভবনের পেছনে রয়েছে। ৪০-৫০ ফুট উঁচু শাখা-প্রশাখা যুক্ত উদ্ভিদটির সঠিক বয়স জানা না গেলেও শত বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে এ উদ্ভিদের অস্তিত্ব আর কোথাও পাওয়া যায়নি বলে দাবি দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও লেখক মো. দেলোয়ার হোসেনের।

টিস্যু কালচার পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিলুপ্ত প্রজাতির গাছটির চারা উৎপাদনে আরও উন্নত গবেষণা হতে পারে, এজন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশের উদ্ভিদ গবেষকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। আঞ্চলিক জনশ্রুতি রয়েছে : কৃষ্ণ রাধাকে কেলিকদম্বের ফুল দিয়ে প্রেম নিবেদন করেন। এ ফুলের কারণেই রাধা কৃষ্ণের প্রেমে পড়েন।

দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের তথ্যমতে কাস্টল উদ্ভিদটির পাতা কর্ডেট এবং বড় বড় আকৃতির। ফুলটি কদম ফুলের মতো তবে তুলনামূলক ক্ষুদ্রাকৃতির। Rubiaceae গোত্রের উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম Adina cordifolia.

কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের এমএসসি শেষ পর্বের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকদের সহযোগিতায় উদ্ভিদটির বংশ বিস্তার বিষয়ে জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। চারা উৎপাদনে বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করেও চারা করা যায়নি তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

অধ্যাপক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুর্লভ প্রজাতির এ উদ্ভিদটি এখানে ছাড়া এ অঞ্চলে আর কোথাও থাকার রেকর্ড এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ২০ বছর পর্যবেক্ষণ করেও ক্যাম্পাসের গাছটি থেকে চারা উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। দুর্লভ প্রজাতির উদ্ভিদটি জাতীয় উদ্যান গাজীপুরের মধুপুর শালবনে থাকার তথ্য জানা যায়। হয়তো আরও কয়েক স্থানে থাকতে পারে তবে এ গাছটি বিলুপ্তির পথে। বিভিন্ন সূত্রমতে উপমহাদেশে উদ্ভিদটি দুর্লভ এবং উত্তরবঙ্গে এ ক্যাম্পাসে উদ্ভিদটির একটি মাত্র গাছ বিদ্যমান। ১৯৯৮ সাল থেকে দেখে আসছি। তবে এ গাছটিতে ফুল হতে দেখা গেলেও এখনো ফল দেখা যায়নি।’

সর্বশেষ খবর