মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বালুচরে কাশফুলের দোল

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

বালুচরে কাশফুলের দোল

চারদিকে উঁচু-নিচু পাহাড়। পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে গেছে ছড়া। ছড়ার দুই পাশে জেগে উঠেছে   ধু-ধু বালুচর। আর এই বালুচরে দোল খাচ্ছে কাশফুল। ছড়াচ্ছে শ্বেত শুভ্রতা। নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে সবুজ চায়ের বাগান। বাগানে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে ছায়া বৃক্ষরাজি। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্যের দেখা মেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ‘কাশবনে’। ভুরভুড়িয়া চা বাগানের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত প্রাকৃতিক ছড়ার পাড়ে ফুটে উঠেছে এই কাশফুল। এর অবস্থান শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ভানুগাছ সড়কের বেলতলী এলাকায়। প্রকৃতির এই অনিন্দ্য সৌন্দর্য্য দেখতে প্রতিদিনই এই কাশবনে এসে ভিড় করছেন পর্যটকরা। মুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতির স্নিগ্ধ কোমল মোহনীয় রূপ দেখে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ছড়ার দুই পাড়ে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কাশফুল ফুটেছে। আর এই সাদা কাশফুল ঘিরে আছে সবুজ প্রকৃতি। দূর থেকে দেখলে মনে হয় এ যেন সবুজের বুুকে সাদা চাদর বিছানো। না কি কোনো শিল্পীর হাতে আঁকা ছবি। মনের এই ভ্রম ভেঙে যায় একটু কাছে গেলেই। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা সড়কে গাড়ি রেখে পাহাড়ের ঢাল দিয়ে নেমে যাচ্ছেন কাশবনে। পা ভিজিয়ে নিচ্ছেন ছড়ার স্বচ্ছ পানিতে। প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছেন ছড়ার জেগে উঠা বালুচরে। কেউ পাহাড়ে উঠে সখ্যতা করছেন কাশফুলের সঙ্গে। কেউবা আনন্দে হারিয়ে যাচ্ছেন কাশবনে। কেউ তুলছেন ছবি। কেউ আবার নিজের মোবাইলে তোলা সেই ছবি দেখাচ্ছেন প্রিয়জনকে। আর ছড়ার পানিতে নেমে ছুটাছুটি করছে পরিবারের সঙ্গে আসা শিশু-কিশোররা। ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা মজিদ মিয়া জানান, তিনি দুই সপ্তাহ ধরে এখানে এসে আমড়া বিক্রি করছেন। প্রতিদিন প্রায় ১০০ লোক এই কাশবন দেখার জন্য আসেন। ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা আমিনুর রশিদ বলেন, ‘খুব সুন্দর, এক কথায় খুব সুন্দর। কাশফুলের সৌন্দর্য্য দেখে আমি মুগ্ধ।’ শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সহ-সভাপতি মো. খালেদ হোসেন বলেন, ‘পাহাড়ি ছড়ার এক পাশে চা বাগান অন্য পাশে কাশবন প্রকৃতির এক অনন্য সৌন্দর্য্য প্রতিফলিত হয়। শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা পর্যটকরা এই কাশবন দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। এই সৌন্দর্যটুকু যাতে বহাল থাকে তার জন্য ট্যুর অপারেটর, পর্যটক ও স্থানীয়দের সবার সজাগ দৃষ্টি থাকতে হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এই কাশফুল শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের জন্য বাড়তি একটি আকর্র্ষণ তৈরি করেছে। কিন্তু অনেক পর্যটক কাশফুলগুলো ছিঁড়ে নিয়ে যায়, যা অনাকাক্সিক্ষত। যে সব বাগানে কাশফুল আছে আমরা সেই বাগান কর্তৃপক্ষকে এগুলো দেখাশুনা ও সৌন্দর্য্য ধরে রাখার জন্য নির্দেশনা দেব।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর