বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের নাটক ঘুম নেই

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধের নাটক ঘুম নেই

দীর্ঘ আট বছর পর ফের মঞ্চে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথাভিত্তিক মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় প্রযোজিত নাটক ‘ঘুম নেই’। ১০৭টি প্রদর্শনী শেষে আট বছর বন্ধ ছিল এ নাটকটির মঞ্চায়ন। ১২ দিনব্যাপী গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের পঞ্চম দিন গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে নাটকটি মঞ্চে এনেছে বলে জানালেন মহাকালের কর্মকর্তা মীর জাহিদ হাসান। নাসির উদ্দিন ইউসুফ রচিত এ নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন জন মার্টিন। বাঙালি জাতি ভুলতে বসেছে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের কথা। যারা যুদ্ধ করেছে, যারা যুদ্ধ দেখেছে এবং যারা যুদ্ধের কথা শুনেছে- সবাই একটি অলিখিত প্রতিযোগিতায় যেন শামিল হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ‘বর্তমান কাল’ থেকে ‘অতীত কাল’ এ স্থানান্তরিত হয়ে ক্রমাগত কেবল বিবর্ণ ইতিহাস যেন না হয়ে যায়। স্বাধীনতার ৫০ বছরেই যেন জাতি মুক্তিযুদ্ধের অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা ভুলে না যায়। মুক্তিযুদ্ধ কেবল বাঙালির জীবনে ঘটে যাওয়া আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়। মুক্তিযুদ্ধ জাতির বহমান জীবনের চেতনা। মুক্তিযুদ্ধ কখনই শেষ হয়ে যাওয়া কোনো যুদ্ধ নয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সেসব সাহসী যুদ্ধের কথা কেবল স্মৃতিকথাও নয়। এসব সত্যি ঘটনা জাতিকে শক্তি জোগায় এবং স্মরণ করিয়ে দেয় এ জাতি কোনো রাজাকার আলবদরের উত্তরসূরি নয় বরং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী সন্তান। ১৬ কোটি মানুষের চোখে ঘুম নেই, ঘুম নেই স্বামীহারা স্ত্রীর চোখে, ঘুম নেই সন্তানহারা পিতার চোখে। এমন প্রেক্ষাপটেই রচিত হয়েছে নাটকটি। এদিকে ‘গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের পঞ্চম দিন সন্ধ্যায় একই সময়ে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় রঙ্গনা নাট্যগোষ্ঠী প্রযোজিত নাটক ‘শত নারী এক পুরুষ’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় স্বপ্নদল প্রযোজিত নাটক ‘হেলেন কিলার’। একই সময়ে সন্ধ্যায় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘কুঞ্জ সাজাও গো’ শিরোনামের ধামাইল গান পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন বহ্নিশিখা ও ‘অবিনাশী কণ্ঠ’ শিরোনামের আবৃত্তি প্রযোজনায় অংশ নেয় আবৃত্তি একাডেমি। এর আগে বিকাল ৪টা থেকে জাতীয় নাট্যশালার উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা।

 উৎসবের প্রতিদিনের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে পঞ্চম দিনের সাংস্কৃতিক আয়োজনে মূকাভিনয় পরিবেশন করে নব আনন্দ, শিশুদের পরিবেশনায় অংশ নেয় শিল্পবৃত্ত, দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে ত্রিলোক বাচিক পাঠশালা, দলীয় সংগীত পরিবেশন করে সুরতাল ও রংধুন এবং দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যালোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ১২ অক্টোবর শেষ হবে ১২ দিনের এ নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব।

সর্বশেষ খবর