বেসরকারি সংস্থা ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম এবং ‘বাঁচতে শেখা’র নির্বাহী পরিচালক অ্যাঞ্জেলা গোমেজের বিরুদ্ধে এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মামলা হয়েছে। মামলার বাদী বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চৌধুরী রিপন। গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতে মামলাটি হয়। নম্বর সিআর-১০১৫/২১। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। মামলার বাদী অভিযোগ
করেন, দুই এনজিওর এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তা হিন্দু আইন পরিবর্তনের দাবির নামে দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি, হিন্দু সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভেদ, ঘৃণা ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর একই অভিযোগে শাহীন আনামদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়। ওই মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করা মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়লাল বিশ্বাস বলেন, প্রচলিত হিন্দু আইনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। বিশেষ করে শাহীন আনাম এবং অ্যাঞ্জেলা গোমেজ কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সভা-সেমিনার করে আসছেন। তারা হিন্দু আইন পরিবর্তনের পক্ষে জনমত সৃষ্টির নামে সরলমনা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব, বিভেদ ও বিশৃঙ্খলা ঘটিয়ে দিচ্ছেন। একই সঙ্গে হিন্দু সমাজকে বিভ্রান্ত করার মধ্য দিয়ে সরকারের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করানোর পাঁয়তারাও করা হচ্ছে। এসব অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। তিনি জানান, আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ২ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার বাদী প্রবীর চৌধুরী রিপন বলেন, দেশে হাজার হাজার হিন্দু আইনজীবী, আইনবিদ, বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে শত শত সাধু-সন্ন্যাসী এবং হিন্দু সমাজসেবী রয়েছেন। হিন্দু আইন বা বিধিবিধানে কোনো সমস্যা বা অসংগতি হলে তা পর্যালোচনা করে দেখার জন্য পর্যাপ্ত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি হিন্দু সমাজে আছেন। আসামিদ্বয় হিন্দু সমাজের কেউ নন। হিন্দু বিধিবিধানের ভালো-মন্দ তাদের স্পর্শ করে না। সে কারণে হিন্দু আইন, বিধিবিধান পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংস্কারের সুপারিশ করার কোনো এখতিয়ার তাদের নেই। আইনগত অধিকারও নেই। অথচ তারা হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সেমিনার, ওয়েবিনার, সংবাদ সম্মেলন করে হিন্দু সমাজের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে দলাদলি সৃষ্টি করে হিন্দু সমাজকে উত্তেজিত করে তুলেছেন। এর আগে রাজধানীর সূত্রাপুরে শাহীন আনামদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে হিন্দু সম্প্রদায়। তারা শাহীন আনাম, তার স্বামী মাহফুজ আনামসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে অভিযুক্তদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। এ ছাড়া এ ইস্যুতে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন, সভা-সেমিনার করে আসছেন।
