শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

সিলেটে বাসাবাড়িতে ঢুকছে অজগর

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে বাসাবাড়িতে ঢুকছে অজগর

সিলেটে বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ছে অজগর সাপ। খাবারের সন্ধানে হানা দিচ্ছে লোকালয়ে। বনবিভাগের কর্মকর্তা ও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন-জঙ্গল উজাড় ও খাদ্য সংকটের কারণে লোকালয়ে আসছে অজগর। গত এক সপ্তাহে শহরতলির মেজরটিলা এলাকার এক বাড়ি থেকে তিনটি অজগর উদ্ধার করা হয়। এর আগেও ওই বাড়ি থেকে আরও দুটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছিল। এ ছাড়া নগরীর ভিতরের বিভিন্ন বাসা থেকেও অজগর উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। লোকালয়ে অজগর সাপ দেখা গেলে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পিটিয়ে না মেরে বনবিভাগকে খবর দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। গতকাল সকালে শহরতলির মেজরটিলা সৈয়দপুরের রাবেয়া বেগমের বাড়ি থেকে একটি অজগর উদ্ধার করেন বনবিভাগের কর্মীরা। এর আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ওই বাড়ি থেকে আরও দুটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে  সেগুলো টিলাগড় সংরক্ষিত বনে অবমুক্ত করা হয়। রাবেয়া বেগম জানান, সকালে তার দেবরের মুরগির খামারে একটি অজগর দেখতে পাওয়া যায়। পরে বনবিভাগ ও পরিবেশকর্মীদের খবর দেওয়া হয়। তারা এসে সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। রাবেয়া বেগম জানান, এর আগে ১ ও ২ অক্টোবর তার বসতঘর থেকে দুটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছিল। গত ছয় মাসে তার বাড়ি থেকে পাঁচটি অজগর উদ্ধার করা হয়। পরিবেশবাদী ‘সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’র সমন্বয়ক আশরাফুল কবির জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত আলুরতল ও বালুচর এলাকার দুটি বাড়ি থেকে আরও দুটি অজগর উদ্ধার করেছেন বনবিভাগের কর্মীরা। এগুলোও টিলাগড় ইকোপার্কের বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। যে বাড়িগুলো থেকে সাপ উদ্ধার হয়েছে সেগুলো টিলাগড় ইকোপার্কের পাশে। এর আশপাশে অনেক টিলা ও বন-জঙ্গল আছে। বাসাবাড়িতে অজগর ঢুকে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বনবিভাগের কর্মীরা বলছেন, অজগর নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। অজগর নিরীহ প্রজাতির বিষহীন সাপ। এরা সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাবারের সন্ধানেই এরা বন ছেড়ে লোকালয়ে আসছে।

বনবিভাগের সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন সিলেটকে অজগরের ‘হটস্পট’ উল্লেখ করে বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলে প্রচুর অজগর সাপ রয়েছে। বিশেষত এখানকার চা বাগানগুলো অজগরের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। আগে চা বাগানে অনেক বনমোরগ ও কাঠবিড়ালি পাওয়া যেত। এগুলো ছিল অজগরের প্রিয় খাদ্য। এসব এখন কমে গেছে। ফলে অজগর খাদ্য সংকটে পড়েছে। তাই বন ও চা বাগানের আশপাশের যেসব বাড়িতে হাঁস-মুরগি আছে, সেসব বাড়িতে অনেক সময় অজগর ঢুকে পড়ে।’

ইদানীং লোকালয়ে অজগরের চলে আসার প্রবণতা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন প্রায় প্রতি সপ্তাহেই দুই-একজন ফোন করে অজগর পাওয়ার কথা জানান। আমরা গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসি। সম্প্রতি লোকালয় থেকে বেশ কিছু বাচ্চা অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, মা অজগর আশপাশে কোথাও এসে ডিম পেড়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর