রবিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

৩৭ ভাগ ছোট পোশাক কারখানার সনদ নেই : সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

তৈরি পোশাকশিল্পে ছোট কারখানাগুলোর মধ্যে ৩৭ ভাগেরই কোনো আন্তর্জাতিক সনদ নেই। তবে বড় কারখানাগুলো বেশ এগিয়ে রয়েছে। শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কারখানার কর্মপরিবেশ ভালো করা সম্ভব। শ্রমিক আইনের বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা। গতকাল তৈরি পোশাক খাত নিয়ে ‘জাতিসংঘের নীতিকাঠামোর আলোকে পোশাক খাতে শ্রম ও কর্মপরিবেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক সিপিডি ও ক্রিশ্চিয়ান এইডের যৌথ আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেন সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক, শ্রমসচিব মো. এহছানে এলাহী, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। আলোচনার শুরুতে খন্দকার মোয়াজ্জেম তুলে ধরেন পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা ও মানবাধিকারসহ নানা বিষয়ের হালনাগাদ তথ্য। এ সময় শ্রমিক সুরক্ষার নানা বিষয় উঠে আসে আলোচকদের বক্তব্যে। নানা সংস্কারের পরামর্শ আসে তাদের পক্ষ থেকে। কারখানার মালিকরাও নীতিমালা বাস্তবায়নে তাদের উদ্যোগের কথা জানান। পোশাক খাত নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের দ্বিমুখী আচরণের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। শ্রম সচিব মো. এহছানে এলাহী বলেন, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে সর্বনিম্ন বয়স কত হবে তা নির্ধারণের শেষ পর্যায়ে আছি আমরা। শ্রম বিধিমালা সংশোধনও শিগগিরই শেষ হবে। কারখানার জন্য যুগোপযোগী আইনি সংস্কার করার কথা জানান শ্রম সচিব।

ওই আলোচনা সভায় শ্রমিক নেতা বাবুল আক্তার বলেছেন, পোশাকশিল্পের মালিকরা ট্রেড ইউনিয়ন মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত নন। তাঁরা ট্রেড ইউনিয়নকে অ্যালার্জি মনে করেন। পোশাকশিল্পের অনেক মালিক গণমাধ্যম কিংবা সভা-সমাবেশে ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে অবস্থান নেন। তবে তাঁরা ট্রেড ইউনিয়নকে ভয় পান। এই শ্রমিক নেতা বলেন, পোশাকশিল্পের মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে দূরত্ব রয়েছে। কারখানার অনেক মালিক দায়িত্ব-কর্তব্য বোঝেন না। অনেকে আবার তা এড়িয়ে যান। শ্রমিকদের মধ্যে অনেকে দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে অবগত নন। আবার শ্রমিক সংগঠনেরও ঘাটতি রয়েছে। বাবুল আক্তারের কথার সূত্র ধরে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে পোশাকশিল্পের মালিকদের মধ্যে ভীতি কাজ করে। তবে দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়ন গঠনকে আমরা স্বাগত জানাই, যদিও দেশে দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়ন আছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’ মুজিবুল হক বলেন, ‘আমাদের দেশে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে দূরত্ব রয়েছে। উভয়পক্ষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও সংলাপের মাধ্যমে এই দূরত্ব ঘোচানো সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, কারখানার অনেক মালিক মনে করেন, ট্রেড ইউনিয়ন হলে বেতন বাড়াতে হবে। মালিকদের বোঝা উচিত, ট্রেড ইউনিয়ন ক্ষতিকর নয়।

সর্বশেষ খবর