সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

নারী চিকিৎসকের লাশ ঝুলছিল ঘরে

আরও দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার একটি হোস্টেল থেকে এক নারী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নাম মাহফুজা আক্তার মুন্নি (২৫)। গত শনিবার রাতে নিকুঞ্জ-২, রোড-৩ এর ২৬ নম্বর বাড়ির ষষ্ঠ তলা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়। জানা গেছে, মুন্নির গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে। তার বাবা নুর আহমেদ খান অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা এবং মা রওশন আরা গৃহিণী। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি মেজো। তার পরিবার ঢাকার কদমতলী থানার উত্তর মুরাদপুরে থাকেন। সুরতহাল প্রতিবেদনে মুন্নির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। আশপাশের বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে খিলক্ষেত থানার এসআই সাবরিনা রহমান মৌরী জানান, শনিবার দুপুরের পর ফোনে কারও সঙ্গে অনেক উচ্চস্বরে কথা বলতে শোনা যায় মুন্নিকে। বিকালে তাকে অনেক ডাকাডাকির পরও দরজা না খোলায় হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এরপর দরজা ভেঙে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে  ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। আমরা মৃতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও মুন্নির মৃত্যুর বিষয়ে কোনো কিছু জানাতে পারেননি। কেনই বা তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন এ বিষয়ে কোনো ধারণা করতে পারছেন না। তারা বলছেন, মুন্নি খুব শান্ত ও নরম স্বভাবের ছিলেন। কারও সঙ্গে তেমন বেশি কথা বলতেন না। খুবই মেধাবী ছিলেন তিনি। সবাই তাকে ভালো জানত। কী কারণে এমনটি ঘটিয়েছে তা তাদের ধারণার বাইরে।

মুন্নির ভাই মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, দুই বছর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছে মুন্নি। এরপর সে টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানায় মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিল। পাশাপাশি সে এফসিপিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এর আগেও সে দু-তিনবার পরীক্ষা দিয়েছে। নিকুঞ্জ এলাকার ওই হোস্টেলে থেকে কোচিং করছিল মুন্নি। কী কারণে আমার বোন গলায় ফাঁস দিতে পারে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।

খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সী ছাব্বির আহমেদ জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা মুন্নিসহ কয়েকজন মিলে ওই হোস্টেলে থাকতেন। তার রুমমেট গ্রামে গেছেন। মুন্নি একাই রুমে ছিলেন। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

এদিকে রাজধানীর ভাটারায় মোসা. শিপন আখতার (৩০) ও গুলিস্তানে অজ্ঞাত এক নারীর (৫৫) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. সাজেদুর রহমান জানান, গতকাল দুপুরে ভাটারার কোকাকোলা ঢালীবাড়ি সড়কের পাশের একটি প্লট থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মোসা. শিপন আখতারের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার বাবার নাম মো. আবদুল কুদ্দুস। গ্রামের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলায়। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীকে ২-৩ দিন আগে অন্য কোথাও হত্যা করে বস্তায় ভরে ঘটনাস্থলে ফেলে গেছে।

এদিকে, পল্টন থানার এসআই আবদুল জলিল বলেন, ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) খবর পেয়ে গতকাল সকালে স্টেডিয়ামের পাশে ৯৮ নম্বর দোকানের সামনে ফুটপাথ থেকে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তার পরনে ছিল নীল রঙের প্রিন্টের ময়লাযুক্ত ম্যাক্সি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

সর্বশেষ খবর