মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

শাপলা পদ্মের স্নিগ্ধতা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

শাপলা পদ্মের স্নিগ্ধতা

গোবরার বিলের পানিতে ফুটে আছে লাল-সাদা শাপলা পদ্ম ফুল। এক মায়াবী স্নিগ্ধতা। সাদা বকের উড়াউড়ি। পাখিদের কলকাকলি কিংবা কোনো সাদা বক, পানকৌড়ি মুক্ত মনে বিলের পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত। মুক্ত বাতাস আর বিলের একপাশে দৃষ্টিনন্দন সবুজ ঘন অরণ্য, পাখিদের কিচিরমিচির ডাকাডাকি, বিলের ওপর বিচিত্র পাখির উড়াউড়ি এসব মনোমুগ্ধকর দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের অন্তরে অন্যরকম শিহরণ জাগিয়ে তুলে। লাল, সাদা শাপলা ফুল বিলের স্বপ্নীল রূপ আরও ফুটিয়ে তোলে। এ ছাড়া অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত বিলের পরিবেশ। ফলে দেশের শেষ সীমানাতেও স্থানীয়সহ প্রকৃতিপ্রেমীদের আনাগোনা দেখা যায়।

বিরল বনবীটের কালিয়াগঞ্জ বাজার এলাকার সীমান্তের কাছে বিশাল এ গোবরার বিলটি। যেখানে ফুটে আছে দৃষ্টিনন্দন হাজারো পদ্ম ও শাপলা ফুল। এক মায়াবী স্নিগ্ধতা। কৈশোরের দুরন্তপনা আর মায়াবী সবুজের সমারোহ। আপনাকে মুহূর্তেই সতেজ করে তুলতে পারে গোবরার বিল। বিলটির পাশেই দৃষ্টিন্দন ঘন অরণ্য বিরলের ধর্মপুর শালবন যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। অনেকে এখানের গাছের আকৃতি দেখে আশ্চর্য হবেন আবার কেউ ভয়ও পেতে পারেন। সাপের মতো পেঁচিয়ে থাকা গিলা উদ্ভিদগুলো ছুঁয়ে দেখতে পারেন। এক অন্যরকম অনুভূতি অনুভব হবে এরকমই বললেন দেখতে আসা দিনাজপুর শহরের আসাদুজ্জামান লিটন, শিক্ষক মোসাদ্দেক হোসেনসহ কয়েকজন।

গোবরার বিল থেকে স্থানীয়রা পূজার জন্য এই পদ্ম ফুল তুলে নিয়ে যায়। প্রকৃতির দৃষ্টিনন্দন সুন্দর নিরিবিলি গাছ-গাছালির এক মোহনীয় প্রকৃতির নয়নাভিরাম ধর্মপুর বনবিট। যা দর্শনার্থী, পর্যটক দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ। এই গোবরার বিল ও বনবিট হতে পারে সরকারের রাজস্ব আয়ের উৎস। শুধু দরকার পরিকল্পনা ও পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ১৬ কি.মি. দক্ষিণ পশ্চিমে বিরল উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা ধর্মপুর ইউনিয়নে এ ধর্মপুর বনবিট ও গোবরার বিল। বিরল উপজেলা থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দক্ষিণে কালিয়াগঞ্জ বাজার। কালিয়াগঞ্জ বাজার থেকে আরও প্রায় ২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই দেশের শেষ সীমানায় এই গোবরার বিল। দিনাজপুর সদরের গৌরীপুর স্লুইস গেট দিয়ে যাওয়া যায় এই বনে।

সীমান্ত ঘেঁষা গোবরার বিল ঘন অরণ্য দৃষ্টিনন্দন ধর্মপুর বনবিটকে করেছে আরও আকর্ষণীয় ও মোহনীয়। তাই এখানেও গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রায় ২ হাজার ৮০০ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা এ বনে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালার সমারোহ। গাছের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যময় ও নিরিবিলি মনকে নাড়া দিবেই। আছে বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখিও। বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক মানুষ পিকনিক করার জন্য বিশেষ করে শীত মৌসুমে এখানে আসে। গোবরার বিল ছাড়াও এই বনের ভিতরে চোখে পড়বে দামি উদ্ভিদ আগর, শাল, আকাশমণি, মিনজুরি, ইউক্লিপ্টাসসহ নানা প্রজাতির বনজ ও ঔষধি গাছের সমারোহ। এ ছাড়া অজানা গাছও এখানে দেখা গেছে যা কেউ নাম বলতে পারেননি। আছে বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি। দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের ফরেস্টার মো. সাদেকুর রহমান সাদেক জানান, এই বনবিটে একটা ছোট ডাক বাংলো রয়েছে। এখানে ২৫ প্রজাতির অধিক শালবনে গাছ রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর