মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
জরিপ তথ্য

নিউইয়র্কে ২০ ভাগ বাংলাদেশিই রয়েছেন দারিদ্র্যসীমার নিচে

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

আমেরিকার বাণিজ্যিক রাজধানী নিউইয়র্ক মেট্রো এলাকায় বসবাস করা বাংলাদেশিদের মধ্যে ২০ ভাগই রয়েছেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের সর্বশেষ জরিপে (২০১৯) এ তথ্য উঠে এসেছে। 

উল্লেখ্য, নিউইয়র্কে চার সদস্যের একটি পরিবারের বার্ষিক আয় যদি ২৬ হাজার ডলারের কম হয়, তাহলেই  তাদের চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে বসবাসকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জরিপে উল্লেখ করা তথ্যের ব্যাপারে ফেডারেশনের কর্মকর্তা মীরা ভ্যানুগোপাল গত রবিবার জানান, ‘নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, ফিলাডেলফিয়া, কানেকটিকাট অঞ্চলে বসবাসরত এশিয়ান-আমেরিকানদের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছেন বাংলাদেশিরা। এর আগে ২০১০ সালের জরিপের তুলনায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা এখন হাডসন ভ্যালিতে ১৯২%, নিউইয়র্ক সিটিতে ১১২%, নিউজার্সি ও ফিলাডেলফিয়ায় ১৭৬% বাড়লেও দারিদ্র্য মুক্তির ক্ষেত্রে তেমন হেরফের ঘটেনি।’ এর কারণ হিসেবে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, বাসা ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কারোরই আয়-রোজগার বাড়েনি। এ অবস্থায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বাফেলো, শিকাগো, বিংহামটন, আপার ডারবি, হিউস্টন, ডালাসে পাড়ি জমালেও পারিবারিক কোটায় নবাগতরা নিউইয়র্কে বসতি গড়েছেন। অর্থাৎ তারা স্বদেশি আমেজে স্বদেশি কালচারে দিনাতিপাত করতে অভ্যস্ত হওয়ায় অর্থ সংকটকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। জরিপে প্রকাশ, মোট জনসংখ্যার ১ পঞ্চমাংশই (যারা বাংলাদেশি, চায়নিজ, পাকিস্তানি এবং নেপালি) গরিবের চেয়েও গরিবানা হালে দিনাতিপাত করছেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ান আমেরিকানদের মধ্যে ১০ বছরের ব্যবধানে চরম দারিদ্র্যের সংখ্যা ১৫% বেড়েছে। ২০১০ সালে ছিল ২ লাখ ৫২ হাজার, ২০১৯ সালে তা ২ লাখ ৯০ হাজার হয়েছে। নিউইয়র্ক মেট্র এলাকায় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী এশিয়ানের হার ১০.৪%। ২০১০ সালে তা ছিল ৯.২%। জরিপের তথ্যে আরও বলা হয়েছে, এশিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ছে বাংলাদেশির সংখ্যা। তারা কঠোর শ্রম দিচ্ছেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের পথে ধাবিত হতে সক্ষম হচ্ছেন না।

এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সিটি, স্টেট এবং ফেডারেল প্রশাসনে বিদ্যমান অনেক সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে তারা পরিচিত না থাকায় ন্যায্য পারিশ্রমিক দূরের কথা ব্যবসায়িক সুবিধাও হারাচ্ছেন। মূলধারার রাজনীতিতে তারা জোরালো ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে সক্ষম হননি এখনো। ভোটের ময়দানেও পিছিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটানোর তাগিদ দিয়েছেন এশিয়ানদের বন্ধু কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। তিনি এই জরিপ সম্পর্কে বলেন, অভিবাসী সমাজের নাজুক অবস্থার অনেক কিছুই আমরা জানতে সক্ষম হলাম। এখন সে সব ইস্যুতে সরব হব। স্টেট সিনেটর জন ল্যু অভিন্ন ভাষায় বলেছেন, এশিয়ানরা নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা দূর করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার বলেছেন, এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের এই জরিপ আমাদের চোখ-কান খুলে দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর