শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মাসব্যাপী প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কৃত করেছে বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ। নৃত্য, আবৃত্তি ও সংগীত এই তিন পর্বে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেয় সংগঠনটি। ‘শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ি’ প্রতিপাদ্যে জাতীয় শিশু দিবস উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিশুকল্যাণ পরিষদ। পুরস্কার বিতরণ ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে আরও ছিল আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। গতকাল বিকালে শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আয়োজক সংস্থার সভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দলীয় নৃত্য পরিবশন করে শিশুশিল্পীরা। ডা. দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই’। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ গড়ার কোনো বিকল্প নেই। আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। তাই শিশুদেরকে যোগ্য, দক্ষ ও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
শিশুদের বিকাশ না ঘটলে জাতির বিকাশ ঘটবে না। এজন্য দরকার সময়োপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা। আমরা অনেক কিছুই শিখি ও মুখস্থ করি কিন্তু তার কোনো প্রয়োগ করতে পারি না। ফলে আমরা প্রায়োগিক ও কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিচ্ছি। যার কারণে সিলেবাসে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আমরা কারিগরি শিক্ষার প্রবর্তন করব। সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশে সব সময় নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে এবং তারা এ দেশের দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। সারা দেশের পূজামন্ডপে হামলাসহ যেসব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, তার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে শিশু বা সদ্য কৈশোর পেরোনোদের। আমরা এখনো তাদের সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পারিনি। এই ব্যর্থতা শিক্ষা ব্যবস্থার, সমাজ ব্যবস্থার এবং রাজনীতিরও। আমরা প্রত্যেকের জায়গা থেকে যদি একটু করে এগিয়ে আসি তাহলেই শিশুদের সঠিক চেতনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। তিনি আরও বলেন, ২১টা বছর- স্বাধীনতার যে চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা, তার ঠিক উল্টো দিকে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সে কারণে তখন কেউ নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলতেও দ্বিধাবোধ করত, যাতে বললে না জানি তখনই তার ওপর জুলুম-নির্যাতন শুরু হয়ে যায়। স্বাধীন দেশে তো এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। সেই যে কালো থাবা, ৭৫-এর ২১ বছর পরেও আজো মাথা জাগিয়ে আছে। তার প্রমাণই আমরা এবার পূজার সময় দেখলাম।