সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সামাজিক অপরাধ বন্ধে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে

-অ্যাডভোকেট এলিনা খান

সামাজিক অপরাধ বন্ধে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে

বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেছেন, আমরা সামাজিক সমস্যাকে সমস্যা হিসেবে দেখি না এবং এটি বুঝিও না। সামাজিক অপরাধ বন্ধ হলে যে সামাজিক উন্নয়নও হয় এ বিষয়টি রাষ্ট্রযন্ত্রের মাথায় থাকে না। তারা মনে করে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সামাজিক অপরাধ দমন করা যাবে। কিন্তু বিচার নিশ্চিত না হলে অপরাধীরা আবারও অপরাধ ঘটাবে। সামাজিক অপরাধ বন্ধ করতে হলে সমাজের বিভিন্ন সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে সে জায়গায় হাত দিতে হবে। গতকাল             বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, রাষ্ট্রের উচিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি সিম্পোজিয়াম, সেমিনার বা ওয়ার্কশপের আয়োজন করে সামাজিক অপরাধের পেছনে থাকা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা। চিহ্নিত সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে এর সমাধানে হাত দিতে হবে। এর মধ্যে কোন সমস্যাগুলোকে অধিক গুরুত্ব দিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে সে ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ সামাজিক এসব সমস্যা খুঁজে বেড়ানোর জন্য রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। আবার সমাজের যারা প্রতিনিধিত্ব করে তাদেরও রাষ্ট্রের ভালোর জন্য কিছু দায়িত্ব নিতে হবে। এসব ব্যক্তির এলাকায় কারা এ ধরনের সামাজিক অপরাধে জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে হবে। আবার সাধারণ মানুষ যারা তাদেরও রাষ্ট্রের প্রতি এক ধরনের দায়িত্ব আছে। সাধারণ মানুষদেরও যার যার জায়গা থেকে সচেতনভাবে তাদের আশপাশে সামাজিক অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে অন্যদের সতর্ক করে দিতে হবে। এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে সাধারণ নাগরিকদের আশ্বাস দিতে হবে যে তাদের কোনো ভয় নেই। তথ্য দিয়ে অন্যদের সতর্ক করে দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষদের ওপর যে কেউ চড়াও হবে না সে ব্যাপারটিও নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ সমাজের ব্যাধি নির্মূল করতে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিয়ে সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে বেশকিছু অস্থিরতা কাজ করছে। তা মাদক এবং অর্থের জন্যও হতে পারে। আমাদের চাহিদা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। সে তুলনায় অর্থের জোগান সীমিত। আমাদের সমাজের ভয়াবহ বাস্তবতা হচ্ছে পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এখানে যে মেয়েরাই সহিংসতার শিকার হচ্ছে তা নয় পুরুষরাও সহিংসতার শিকার হচ্ছে। আবার পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন আইনের যারা অপব্যবহার করছেন তাদের মাধ্যমে কিছু পুরুষও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ জন্য সমাজে নারী-পুরুষের যে সমতা বা ভারসাম্য তা ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে পরিবারে মা-বাবা, ভাই-বোনের যে সম্প্রীতি এবং একে অপরের প্রতি যে সম্মান তাও এখন আর কাজ করছে না। এগুলোও ফিরিয়ে আনতে হবে। এর মাধ্যমে সমাজের ব্যাধি অনেকটাই কমে আসবে। মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও অবক্ষয়ের জন্য আজ পারিবারিক হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটছে।

সর্বশেষ খবর