সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নিউইয়র্কে জমেছে বাংলা বইমেলা

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

নিউইয়র্কে জমেছে বাংলা বইমেলা

বাংলা বইমেলায় এসে প্রবাসীদের প্রাণোচ্ছল উপস্থিতির সঙ্গে একাকার হয়ে নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বললেন, ‘আমি মুগ্ধ-অভিভূত। এই নিউইয়র্কের বহুজাতিক সমাজের অপূর্ব এক প্রতিচ্ছবি দেখছি এ মেলায়। বাঙালির মেলা হলেও ভিন্নভাষীদের পদচারণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে করোনায় ক্ষত-বিক্ষত কমিউনিটিকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ক্ষেত্রে এ মেলার গুরুত্ব অপরিসীম।’

৩০ অক্টোবর ছিল নিউইয়র্কে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের পাঁচ দিনব্যাপী বইমেলার তৃতীয় দিন। জ্যাকসন হাইটসে জুইশ সেন্টারে এদিন সন্ধ্যায় এসেছিলেন এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ক্যাটালিনা ক্রুজ। ঘুরে ঘুরে তিনি দেখেন বইয়ের স্টল আর জড়ো হওয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নির্মল আড্ডা। তার অনুভূতি জানতে চাইলে এ সংবাদদাতাকে সরাসরি বললেন, ‘এটাই এই সিটিতে বাঙালির সরব উপস্থিতির অন্যতম একটি উদাহরণ। এভাবেই কঠোর শ্রম আর মেধার বিনিয়োগ ঘটিয়ে উঠতি কমিউনিটি হিসেবে বাঙালিরা নিজের বিশেষ একটি অবস্থান তৈরি করছেন।’ এ সময় মেলার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন্নবীর সঙ্গেও কথা বলেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জনপ্রিয় এই রাজনীতিক। ড. নুরুন্নবীও জানান, তিনিও নিউজার্সির প্লেইন্সবরো কাউন্সিলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নির্বাচিত প্রতিনিধি। ড. নবী তাকে অবহিত করেন, বই হচ্ছে সর্বজনীন একটি অবলম্বন, যার মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে মানুষের, জাতির সঙ্গে আরেকটি জাতির সম্মিলন ঘটে আসছে। ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা সম্ভব হচ্ছে। বহুজাতিক এ সমাজে বইয়ের পাঠক যত বাড়বে ততই সুদৃঢ় হবে সম্প্রীতির বন্ধন।

মেলায় ঘুংঘুরের বইয়ের স্টলে থাকা কবি ও কলামিস্ট ফকির ইলিয়াস ও কবি ফারহানা ইলিয়াস তুলিসহ কয়েকজন লেখিকার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় সবাইকে অভিনন্দন জানান ক্যাটালিনা ক্রুজ। লেখনীতে মানবতার কথা, সামাজিক সম্প্রীতি অটুট রাখার সুফল ইত্যাদি আরও বেশি গুরুত্ব হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ।

উল্লেখ্য, ২৮ অক্টোবর লাগোয়ার্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলের বলরুমে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানে ৩০তম বাংলা বইমেলার উদ্বোধন করেন কবি আসাদ চৌধুরী। এর পরই মেলার প্রধান অতিথি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বক্তব্য দেন। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান বইমেলার আয়োজকসহ অংশগ্রহণকারীদের। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর মমত্ববোধের তাগিদেই ৩০ বছর ধরে এ বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম। উদ্বোধনী রজনীতে মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করেন তিন কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, কাদেরী কিবরিয়া ও শহীদ হাসান। উল্লেখ্য, একই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীও উদ্্যাপিত হচ্ছে। দ্বিতীয় দিন থেকে মেলা চলছে জুইশ সেন্টারে। বইয়ের স্টল ছাড়াও কবিতা আবৃত্তি ও পাঠের অনুষ্ঠান এবং বাংলা সাহিত্য নিয়ে মুক্ত আলোচনা হচ্ছে মেলায়। ঢাকা থেকে বেশ কটি প্রকাশনা সংস্থা এ বছর প্রকাশিত বইয়ের সমাহার ঘটিয়েছে। উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত বছর ভার্চুয়ালি হয়েছে  মেলা।

সর্বশেষ খবর