সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

গাইবান্ধায় অচেনা প্রাণীর আক্রমণ থামেনি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ছয়টি গ্রামে গত দেড় মাস থেকে অচেনা এক প্রাণীর আক্রমণ চলছে। তবে গত কিছুদিন থেকে এর আক্রমণ বেড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে একজনের আর আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। ফলে এসব গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কৃষকরা মাঠে কাজে যেতে পারছেন না। এলাকাবাসী জানান, গত দেড় মাস ধরে পলাশবাড়ী উপজেলার ছয়টি গ্রামে অচেনা এই প্রাণীর আক্রমণ শুরু হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে তালুক কেঁওয়াবাড়ী, হরিণাথপুর, কিশামত কেঁওয়াবাড়ী, খামার বালুয়া, দুলালেরভিটা ও তালুকজামিরা।

এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নতুন করে তিনজন ওই প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে কিশামত

 কেঁওয়াবাড়ী গ্রামের আফসার আলীর (৫০) পায়ে, খামার বালুয়া গ্রামের আবদুল হালিমের (৪৫) হাতে এবং দুলালেরভিটা গ্রামের ছাব্বির শেখের (৫২) পায়ে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায় ওই প্রাণী। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারা জানান, মাঠে কাজে গিয়েই তারা আক্রান্তের শিকার হন। আক্রান্তদের দাবি, প্রাণীটি দেখতে শিয়ালের মতো। প্রাণীটির মাথা ও লেজ আকারে বড়। প্রাণীটি ঝোপ-জঙ্গল, ধানের জমি থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণ করছে। সম্প্রতি একটি শিয়ালকে মেরেও ফেলে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান বলেন, আক্রান্তদের রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। তারা সুস্থ হচ্ছেন। এটি কোনো পাগল শিয়াল জাতীয় প্রাণীর আক্রমণ ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে থাকতে এবং আক্রান্ত হলে হাসপাতালে এসে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এসব বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মাসুদার রহমান বলেন, শিয়াল, কুকুর, বিড়ালসহ হিংস্র প্রাণীরা জলাতঙ্ক রোগের রেডিস ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে। এসব প্রাণী যখন নিজেরা জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়, তখন তারা মানুষ ও যে কোনো প্রাণীকে কামড় দিলে তারাও জলাতঙ্কে আক্রান্ত হতে পারে। পলাশবাড়ীর ওইসব গ্রামে যেসব প্রাণী মানুষকে আক্রমণ করছে তারা হয়তো জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। শিয়াল কিংবা কুকুরের জলাতঙ্ক হলে তারা পাগল হয়ে থাকে। সেগুলোই হয়তো মানুষ ও গরু-ছাগলকেও আক্রমণ করছে। তবে কী ধরনের বা কোন প্রাণী আক্রমণ করছে, তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মানুষ বা পশু যাকেই এ ধরনের প্রাণী কামড় দিক, তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত এন্টি রেবিস ভ্যাকসিন দিতে হবে।

পলাশবাড়ী থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, ওইসব গ্রামের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। আতঙ্ক কাটাতে পুলিশও টহল দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর