শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যের সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি পুলিশ

নথি গায়েব

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের চুরি হওয়া নথির খোঁজ পায়নি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এমনকি নথি গায়েবের বিষয়ে কোনো ধরনের ক্লুও খুঁজে পায়নি সংস্থাটি। ঘটনার এক সপ্তাহ পরও মন্ত্রণালয়ের সিসিটিভি ফুটেজও জব্দ করতে পারেনি পুলিশ। তবে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সচিবালয়ের যেসব কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাখা হয়েছিল তাদের গতকাল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাদিরা হায়দার স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে ১৭টি নথি হারিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে গত ২৮ অক্টোবর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিনই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে একটি চিঠি দেয় থানা পুলিশ।

গতকাল শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার জানান, এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে চিঠির জবাব পাওয়া যায়নি। তবে তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে আমাদেরকে জানিয়েছেন যে তাদের সিসিটিভি নষ্ট। তাই কোনো ফুটেজ তাদের কাছে নেই। তবে থানা থেকে সেই বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। আর যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটির মামলা হওয়ার সুযোগ ছিল। আর এখনো মামলার সুযোগ রয়েছে। সিআইডি সূত্র জানায়, চুরি হওয়া নথিগুলো ক্রয় সংক্রান্ত এবং অভিযুক্ত চিকিৎসকদের তদন্ত প্রতিবেদন সংক্রান্ত। নথির খোঁজে সংস্থাটি এ পর্যন্ত অন্তত ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর মধ্যে ৯ জনকে তিন দিনের বেশি সময় আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরা একেক সময় একেক রকম তথ্য দিচ্ছেন সিআইডি কর্মকর্তাদের কাছে। গত রবিবার স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের পাশাপাশি সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। গত সোমবার স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের আরও তিন কর্মচারীকে আনা হয়। এরা হলেন- বেলাল পলাশ, আবদুল বারী, আয়েশা সিদ্দিকা, জোসেফ সরদার, বাদল, মিন্টু, অহিদ খান, সেলিম ও হাবিব।

সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানিয়েছেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরের পর তারা চলে গেছেন। তবে নথি চুরির তদন্তের অগ্রগতি এখন পর্যন্ত নেই। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে চুরি হওয়া নথিগুলোর তালিকা সংগ্রহ করা হয়। এসব নথি কোন কোন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট তাদেরও একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব নথিতে সুবিধাভোগী এবং ভুক্তভোগী উভয়ের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। আর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) শাহাদৎ হোসাইনের কক্ষের লাগোয়া ঘর থেকে নথিগুলো খোয়া যায়। শাহাদৎ হোসাইন সচিবালয়ের ৩ নম্বর ভবনের ২৯ নম্বর কক্ষে বসেন। পাশের লাগোয়া ঘরটিতে বসেন ক্রয় ও সংগ্রহ শাখা-২ কম্পিউটার অপারেটর জোসেফ সরদার ও আয়েশা সিদ্দিকা। ফাইলগুলো ওই দুজনের কেবিনেটে রাখা ছিল। এ দুজনকেই প্রধান সন্দেহের মধ্যে রেখেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর