শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সীমান্তের ওপারে পড়ে আছে সেই দুই লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্তের  নো ম্যান্স ল্যান্ডের ভারতীয় অংশে এখনো পড়ে আছে দুই বাংলাদেশে নাগরিকের গুলিবিদ্ধ লাশ। বিজিবি-বিএসএফ আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লাশ উদ্ধার সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। এদিকে, ৪৮ ঘণ্টায়ও লাশ দুটি উদ্ধার না হওয়ায় নিহতদের স্বজনদের আর্তনাদ থামছে না। যে কোনো মূল্যে লাশ উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছেন তারা। নিহতরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার এড়ালিগুল গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে আসকর আলী ও একই গ্রামের আবদুল হান্নানের ছেলে আরিফ হোসেন। সম্পর্কে তারা চাচা-ভাতিজা বলে জানা গেছে। গত বুধবার সকাল থেকে দুজনের গুলিবিদ্ধ লাশ ডোনা সীমান্তের ১৩৩১ নম্বর মেইন পিলারের কাছে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।

 সূত্র জানায়, লাশ দুটি উদ্ধারের জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে গতকাল বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। একই সঙ্গে সীমান্তে হত্যার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায় বিজিবি। এ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে গতকাল কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। ভারত সীমান্তে লাশ পড়ে থাকলেও বৈঠকে বিএসএফ হত্যাকান্ডের দায় নিতে রাজি হয়নি। ভারতীয় কারও হাতে ওই দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছে- এমনটা মানতে রাজি নয় বিএসএফ। আর বিজিবির দাবি, গুলিবিদ্ধ লাশ যেহেতু ভারতীয় সীমান্তে পাওয়া গেছে, তাই এর দায় বিএসএফ বা ভারতীয় খাসিয়াদেরই নিতে হবে। এ নিয়ে পরে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীরা তাদের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি অবগত করেছেন।  সূত্র আরও জানায়, বিজিবি ও বিএসএফের এই টানাটানির কারণে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লাশ দুটি উদ্ধার হয়নি। রাতের মধ্যে লাশ উদ্ধারের সম্ভাবনাও কম বলে জানা গেছে। অপর একটি সূত্র জানায়, সীমান্ত আইন অনুযায়ী ভারতের অভ্যন্তরে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশের ময়নাতদন্ত সেখানকার হাসপাতালে হবে। এরপর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করার কথা। এদিকে, লাশ উদ্ধার না হওয়ায় সীমান্তের এপারে নিহত দুজনের পরিবারে কান্নার রোল থামছে না। স্বজনদের দাবি, মঙ্গলবার বিকালে দুজন বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। এরপর আর তারা বাড়ি ফিরেননি। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে তারা জানতে পেরেছেন, মঙ্গলবার রাতে ডোনা সীমান্ত দিয়ে দুজন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উখিয়াং এলাকায় অনুপ্রবেশ করেন। এ সময় বিএসএফের গুলিতে তারা নিহত হন। পরে তাদের লাশ নোম্যান্স ল্যান্ডে এনে ফেলে রাখা হয়। লাশ উদ্ধারের অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানতে বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সোহেল আহমদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফোন দেওয়া হলে তিনি কেটে দেন। কানাইঘাট থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, লাশ উদ্ধারের ব্যাপারে বিজিবি-বিএসএফ আলোচনা চলছে। এখনো আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় লাশ উদ্ধার হয়নি।

সর্বশেষ খবর