সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে উন্নত দেশগুলো

শুধু আলোচনার টেবিলেই ১০০ বিলিয়ন ডলার

মাহমুদ আজহার, গ্লাসগো (স্কটল্যান্ড) থেকে

জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০২০ সাল থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার করে দেওয়ার কথা ছিল উন্নত দেশগুলোর। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ২০২০ সাল গড়িয়ে এখন ২০২১ সালও শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিশ্রুতি রাখেনি প্রভাবশালী দেশগুলো। ২০২১ সালের মধ্যেই যেন ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে, সেটি আলোচনা হচ্ছে গ্লাসগোয় উচ্চ  পর্যায়ের বৈঠকে। ইতিমধ্যে আলোচনা অনেক দূর গড়িয়েছে। ১০০ বিলিয়ন ডলার ২০২০-২০২১, ২০২২-২৩, ২০২৪-২৫ অর্থ সাল পর্যন্ত দিতে রাজি হয়েছে বড় দেশগুলো। এই বিষয়টি আজ থেকে মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত আসবে। তবে ডলার দেওয়া শুরু হবে হয়তো ২০২২ সালে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী গতকাল গ্লাসগো সম্মেলনে বলেন, আলোচনা চলছে। আশা করছি এবার অগ্রগতি হবে। এবারও আলোচনায় ছিল ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল নিশ্চিত হওয়া নিয়ে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস উঠে আসে ক্লাইমেট ভার্নারেবল ফোরামের আলোচনাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে। জলবায়ু সম্মেলন বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিকুর রহমান বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে কম; অতীতে বিপুল পরিমাণ কার্বন নিঃসরণের দায়ভারও উন্নত দেশগুলোর। অথচ উন্নয়নশীল দেশগুলোকেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে।  তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে সাইক্লোন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, নদী ও পাহাড় ভাঙা অনেক বেড়ে গেছে। এখন প্রতিবছরই ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন হচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাব থেকে বাঁচা যাবে। বাংলাদেশ থেকে আসা জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্র উচ্চতা বেড়ে গেছে। গোপালগঞ্জে লবণাক্ততা পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই লবণাক্ততায় দুই/একটি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তারা বলছেন, দুর্যোগে ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে স্থানচ্যুতি ও দেশান্তর (উরংঢ়ষধপবসবহঃ ্ গরমৎধঃরড়হ) বাংলাদেশে একটা প্রকট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সে ক্ষেত্রে মাইগ্রেশন, ডিসপ্লেসমেন্ট ইস্যুগুলোকে বিভিন্ন প্ল্যাটফরম/নেগোসিয়েশনের টেবিলে জোর আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতায় আঘাত আসতে পারে। সেজন্য আমাদের মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন সহজে চলে যাবে না, বাড়তেই থাকবে, এখান থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে এবং অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে। এসব বিষয়ে আমরা বিভিন্ন পলিসিতে আমাদের কথা তুলে ধরছি। তারা বলেন, এলডিসি থেকে আমরা বের হতে পারছি না। ২০২৬ সাল লাগবে বের হতে। আমরা কীভাবে এলডিসি থেকে বের হতে পারব সে পথ বের করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর