সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ত্রিপুরায় শতাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার

প্রতিদিন ডেক্স

ভারতের ত্রিপুরায় সামাজিক মাধ্যমের (social media) বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল বিপ্লব দেব সরকারের। চার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা রুজু হওয়ার তিন দিন বাদে শতাধিক সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাস দমন ধারা প্রয়োগ করল রাজ্য পুলিশ। টুইটারের অনলাইন ল এনফোর্সমেন্ট রিকোয়েস্ট সিস্টেমে পাঠানো নোটিসে পশ্চিম আগরতলা থানার ওসি ১০২টি হ্যান্ডল ব্লক করতে বলা হয়েছে। রাজ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও মসজিদে হামলার অভিযোগের ব্যাপারে সেগুলো থেকে আপত্তিকর খবর, বিবৃতি ছড়ানো হচ্ছিল বলে তাঁর দাবি। ওই অ্যাকাউন্টগুলোর পরিচালনাকারী বা ব্যবহারকারীদের সম্পর্কেও তথ্য চেয়েছে পুলিশ। সেগুলো থেকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর মতো ভুয়া বা সাজানো ছবি, বক্তব্য পোস্ট করার অভিযোগ পেয়েছে তারা। একই নোটিস পাঠানো হয়েছে ফেসবুক, ইউটিউবকেও। পুলিশ নোটিসে বলেছে, কিছু লোক, সংগঠন টুইটার, ত্রিপুরা রাজ্যে মসজিদে হামলা, সাম্প্রতিক সংঘর্ষ নিয়ে অন্য ঘটনার বিকৃত, আপত্তিকর খবর, বিবৃতি, মিথ্যে ছবি, ভিডিও ছড়াচ্ছে যার উদ্দেশ্য ফৌজদারি চক্রান্ত বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা। ওই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলারদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৫৩এ, ১৫৩ বি, ৪৬৯, ৪৭১, ৫০৩, ৫০৪, ১২০ বি ও ইউএপিএ-র ১৩ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ১৫০টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখার জন্য তালিকায় রাখা হয়। সেগুলোর কনটেন্ট ভালো করে পরীক্ষার পর ১০১টিকে চিহ্নিত করা হয়, যেগুলো থেকে উসকানিমূলক প্রচার চালানো হয়েছিল, যার জেরে ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়াতে পারত। জনৈক পদস্থ পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো সাম্প্রদায়িক প্রপাগান্ডার সঙ্গে চার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর সাম্প্রতিক ত্রিপুরা সফরের যোগ পাওয়া গিয়েছে। চার আইনজীবীর নিরপেক্ষ তথ্যানুসন্ধানী দলটি লইয়ার্স ফর ডেমোক্র্যাসির ব্যানারে রাজ্য ঘুরে এসে সাংবাদিক সম্মেলনে জানায়, কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সংখ্যালঘু এলাকায় তান্ডব চালিয়েছে, মসজিদে হামলা করেছে, মুসলিমদের দোকান, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। দলটি গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক করে। পুলিশ বলেছে, নোটিস পাঠানো মানে এই নয়, এখনই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। তাদের তলব করে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। তারা আদালতে চ্যালেঞ্জও করতে পারে। পুলিশ বলছে, যে-ই বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, প্রপাগান্ডা চালানোর চেষ্টা করুক, সেটা বেআইনি কার্যকলাপ। ইউএপিএ-র ১৩ ধারা তুলনামূলকভাবে নরম কেননা তাতে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাবাস হয়। এদিকে ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য্যরে দাবি, ‘পুলিশি পদক্ষেপে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদৌ খর্ব হয়নি। পুলিশকে তো তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে তদন্ত করতেই হবে। অভিযুক্তরা এমন কাজে যুক্ত প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেই হবে। গণতান্ত্রিক দেশে বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আবশ্যিক, কিন্তু সীমাহীন নয়।’ ত্রিপুরা কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহার মত, ‘ত্রিপুরা যাওয়া আইনজীবীদের এভাবে অভিযুক্ত করা সঠিক নয়। তারা এখানে দাঙ্গা বাধাতে আসেননি। এমন আইন প্রয়োগ করা ঠিক নয়। সত্যিই সাম্প্রদায়িক প্রচার হয়ে থাকলে সরকার ব্যবস্থা নিতেই পারে। এটা আইনের অপব্যবহার।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর